নেইমারের জ্বলে ওঠাটা স্বাভাবিকই ছিল। বার্সেলোনার জার্সিতে পিএসজিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বাইরে ছিটকে দেওয়ার ম্যাচে রূপকথার জন্ম নিয়েছিল এই ওয়ান্ডারবয়ের পায়েই। সেই ফর্মটি এসে পৌঁছাল ব্রাজিলের জার্সিতেও। কিন্তু এদিন যেন সবটুকু আলো কেড়ে নিতে মঞ্চে এসেছিলেন পাউলিনহো। চীনের ক্লাব গুয়াংঝু এভারগ্রান্দের এই মিডফিল্ডারের হ্যাটট্রিকে উরুগুয়েকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিল। সেলেসাওদের বাকি গোলটি নেইমারের।
এই জয়ে ২০১৮ এর রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে ব্রাজিল। শুক্রবার ভোরের জয়টি আবার তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা অষ্টম জয় ব্রাজিলের।
মন্টেভিদিওতে ম্যাচের আট মিনিটে অবশ্য এডিনসন কাভানির পেনাল্টি গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ব্রাজিলই। গোলরক্ষক অ্যালিসন পিএসজির এই স্ট্রাইকারের থেকে বল কেড়ে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়লে পড়ে যান কাভানি। তাতে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে দেন চলতি মৌসুমে পিএসজির সর্বোচ্চ গোলদাতা। স্বাগতিকরা সেটি বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি। পিছিয়ে পড়েই জ্বলে ওঠেন নেইমার-আলভেজরা।
ম্যাচের ২০ মিনিটে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান পাউলিনহো। ২৫ গজী এক দূরপাল্লার বুলেট শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। গোলটিতে অবদান নেইমারের, দারুণ এক পাসে সমতা ফেরানোর উৎসটা এসেছিল তার কাছ থেকেই। প্রথমার্ধে সমতায় থেকেই দু’দল বিরতিতে যায়।
মধ্যবিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধের ৫২ মিনিটে ফিরমিনোর শটে দেয়াল হয়ে দাঁড়ালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি উরুগুয়ের গোলরক্ষক। পাউলিনহো স্বাগতিক গ্যালারিতে পিনপতন নীরবতা নামিয়ে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে ফিলহোর পাস থেকে বল পেয়ে দলকে আরেকদফা এগিয়ে দেন নেইমার। নেইমারকে বল দিয়েছিলেন মিরান্দা। সেটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ এক চিপে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন। আর ম্যাচের যোগ করা সময়ে উরুগুয়ের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিয়ে হ্যাটট্রিক আদায় করেন পাউলিনহো।
এই জয়ে টানা আট ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত থাকল ব্রাজিল। যার তিনটি জয় ও পাঁচটি ড্র। আর ১৩ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে সেলেসাওরা রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে। সাউথ আমেরিকা অঞ্চলে টেবিলের শীর্ষে তারা।
অন্যদিকে এই অঞ্চলের বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনা ২২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে উঠে এসেছে। উরুগুয়ে সেখানে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে আছে। আর হামেস রদ্রিগেজের একমাত্র গোলে বলিভিয়াকে হারানো কলম্বিয়া ২১ পয়েন্ট নিয়ে চারে আছে। প্যারাগুয়ের কাছে ২-১ গোলে হেরে বসা ইকুয়েডর ২০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে এবং চিলি ২০ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে।
কনমেবল অঞ্চলের ১০টি দেশের মধ্যে টেবিলের শীর্ষ চারটি দল সরাসরি রাশিয়া বিশ্বকাপে জায়গা করে নেবে। পঞ্চম দলটিকে দিতে হবে বাড়তি পরীক্ষা। প্লে-অফে খেলতে হবে ওশেনিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে।