পাঁচ বছর হয়ে গেলো! তবু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (র্যাব) আদালতে দাখিল করতে পারলো না সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন! আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের একটি পুর্নাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে না পারাকে দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তার ‘চরম ব্যর্থতা’ বলে উল্লেখ করেছেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরসিদ আলম খান।
সর্বশেষ গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মহানগর হাকিম মাজহারুল ইসলাম এই মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের এএসপি মহিউদ্দিনকে আগামী ২১ মার্চ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত পাঁচ বছরে ৪৬ বার সময় নিয়েও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি র্যাব।
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে দীর্ঘ সময় যাওয়া প্রসঙ্গে আইনজীবী খুরসিদ অালম খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘পাঁচ বছরে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে না পারা দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তার ‘চরম ব্যর্থতা’ ছাড়া কিছুই নয়। তদন্তে এতো সময় ব্যয় হলে মামলার এভিডেন্স নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। ন্যায় বিচার প্রাপ্তির আশা শেষ হয়ে যায়। আর এইরূপ আলোচিত ঘটনার দ্রুত বিচার না দেখতে পেলে দেশের সাধারণ মানুষের মনে ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠে।’
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় ঐ বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর মেহেরুন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। ঐ মামলার ধারাবাহিকতায় শেরেবাংলা নগর থানার হাত ঘুরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি। কিন্তু দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিন পর ডিবি হাইকোর্টের কাছে তাদের ব্যর্থতা স্বীকার করলে আদালত র্যাবকে এই মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। তার পর থেকেই র্যাব এই মামলাটি তদন্ত করছে। এবং মামলার তদন্তের বিষয়ে একাধিকবার অগ্রগতি আদালতকে জানিয়েছে। কিন্তু এখনো পূর্ণাঙ্গ কোন তদন্ত প্রতিবেদন র্যাব আদালতে দাখিল করতে পারেনি।
আলোচিত এই মামলায় আটজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃত্তরা হলেন রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল, পলাশ রুদ্র পাল এবং নিহত দম্পতির বন্ধু তানভীর রহমান। তবে এদের মধ্যে থেকে তানভীর রহমান ও পলাশ রুদ্র পাল সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া জামিনে রয়েছে।