চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

পথশিশুদের ব্যাংক হিসাবে জমা সাড়ে ২৬ লাখ টাকা

পথশিশুদের উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করার জন্য সর্বনিম্ন ১০ টাকা জমা দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে খোলা হিসাবে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ২৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা জমা হয়েছে। হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৬৫টি। দেশের ১৭টি ব্যাংক ১২ থেকে ১৩টি এনজিওর মাধ্যমে এসব হিসাব খুলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রৈমাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়: চলতি বছরের জুন পর্যন্ত পথশিশুদের জন্য সবচেয়ে বেশি হিসাব খুলেছে রূপালী ব্যাংক। ব্যাংকটিতে খোলা মোট এক হাজার ২১টি হিসাবে জমা রয়েছে ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এছাড়া ৬৮৫টি ব্যাংক হিসাব খুলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এসব হিসাবে জমার পরিমাণ তিন লাখ ৪৮ হাজার টাকা। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৪৬টি হিসাব খোলা হয়েছে পূবালী ব্যাংকে।

দেশে কর্মজীবী শিশুর সংখ্যা ৭০ লাখের বেশি। আর পথশিশুর সংখ্যা ৮ থেকে ১০ লাখ। এসব শিশুকে উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করতে এবং তারা যাতে পথভ্রষ্ট না হয় সেই চিন্তা-ভাবনা থেকেই পথশিশুদের ব্যাংকিং সেবায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সুযোগ দেয়া হয় মাত্র ১০ টাকায় হিসাব খোলার। পথশিশুদের জমার ওপর সর্বোচ্চ সুদ দেয়ার নির্দেশনাও রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

২০১৪ সালের মার্চে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেওয়া নির্দেশনার আলোকে ব্যাংকগুলো পথশিশুদের জন্য হিসাব খোলা শুরু করে। এছাড়া সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার বিনিময়ে হিসাব খোলার সুযোগ দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা, পোশাকশ্রমিক, দুস্থ, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, ক্ষুদ্র জীবন বীমার পলিসি গ্রহীতা, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা এই সুযোগের আওতায় হিসাব খুলতে পারে। এজন্য হিসাব থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাংককে কোন চার্জ বা ফি দিতে হয় না।

সুবিধাবঞ্চিত পথ ও কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের হিসাব খোলার ১৭টি ব্যাংক হলো-রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী, অগ্রণী, রূপালী ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। আর বেসরকারি ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ন্যাশনাল, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, পূবালী, দ্য সিটি, ট্রাস্ট, আল আরাফাহ্ ইসলামী ও উত্তরা ব্যাংক।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়: কৃষকের ১০ টাকার হিসাবও বাড়ছে। বর্তমানে এসব হিসাবের সংখ্যা ৯১ লাখ ৯০ হাজার ৬৪। আর হিসাবগুলোতে জমা হয়েছে ২৬৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

২০১০ সাল থেকে একের পর এক নির্দেশনার মাধ্যমে কৃষকসহ আর্থিক সেবা প্রত্যাশী জনগোষ্ঠীর জন্য এ ধরনের হিসাব খোলা হচ্ছে। এসব হিসাব সচল রাখতে ২০১৫ সালে ২০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল করা হয়েছে। যেখান ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত জুন পর্যন্ত কৃষকদের হিসাবের ২৩ হাজার ৩৭৩টির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকার তহবিল থেকে ৫৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা পুনঃঅর্থায়ন করা হয়েছে।

বিশেষ ব্যবস্থার হিসাবের মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় খোলা ৪৪ লাখ ২১ হাজার হিসাবে রয়েছে ৩৫৩ কোটি টাকা। মুক্তিযোদ্ধাদের নামে খোলা ২ লাখ ১ হাজার ১১৩ হিসাবে জমা রয়েছে ১৬৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। তৈরি পোশাক শ্রমিকদের খোলা ২ লাখ ৩০ হাজার ১৪৩ হিসাবে রয়েছে ১০২ কোটি টাকা। আর দুস্থ, পরিচ্ছন্ন কর্মী, ক্ষুদ্র জীবন বিমার পলিসি গ্রহীতা, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্যদের হিসাবেও অনেক অর্থ জমা হয়েছে।