কোন কল্পিত নাটকের দৃশ্যপট নয় এক সত্যিকারের গল্পই এবার ফেসবুকের মাধ্যমে সবার সামনে তুলে আনলেন বাংলাদেশ সরকারের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যজিস্ট্রেট সুমন চন্দ্র দাশ। ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি তুলে ধরেন এক মমতাময়ীর গল্প।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, এ কোন কল্পিত নাটকের দৃশ্যপট নয়। সত্যি না, একেবারেই না! ইহা একটি মমতাময়ী জেলা প্রশাসকের অন্তরাত্মার দৃশ্যপট। প্রতিদিনকার মতো আজও নানা অভাব, অভিযোগ নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করছিল বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। হঠাৎ করে আসলো অল্পবয়সী এক জননী। জেলা প্রশাসক সকাল থেকেই বলছিলেন, আজকের ঠাণ্ডাটা একটু বেশি বেশি। সদাহাস্য জেলা প্রশাসক তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতেই মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কি সমস্যা? মেয়েটি উত্তর শুরু করতে না করতেই বললেন, আহা করছো কি? বাচ্চাটাতো ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছে, ইশ। আগে ওকে ভালো করে কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নাও। মেয়েটি চেষ্টা করলো, কিন্তু কিছুতেই গুছিয়ে উঠতে পারছিল না। জেলা প্রশাসকের বোধহয় মনে হলো, উনি যে রকম তার সন্তান কে যত্ন নিয়েছেন, মেয়েটি সেরকম করে পেরে উঠছিল না। আফসোস করে বললেন, আহারে তুমিতো নিজেকেই গোছাতে পারলে না, এরই মধ্যে মা হয়ে গেলে। আসলে তিনি এ কথার মধ্য দিয়ে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কেই বলছিলেন। এবার তিনি নিজেই চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে বাচ্চাটিকে কাপড় দিয়ে মোড়াতে গিয়ে দেখলেন, যে কাপড় দিয়ে মোড়ানো ছিল সেটি ভেজা আর ছেড়া। সাথে সাথে আমাকে অর্ডার করলেন, এই এনডিসি এক্ষুণি একটা কম্বল এনে দাও। জেলা প্রশাসকের ত্রাণ ভাণ্ডার থেকে কম্বল নিয়ে আসা হলো। এনডিসি হিসেবে একটু সাহস করে বললাম, পিচ্চিটাকে একটা শীতের পোশাক দিয়ে দিব। প্রায় ধমক দিয়ে বললেন, দিব মানে, নিয়ে আসো। নিয়ে আসা হলো নতুন পোশাক।
অবহেলায় অযত্নে বেড়ে উঠা আগামীর নতুন কে নতুন পোশাকে মুড়িয়ে দিলেন মমতাময়ী আরেক মা, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক তানজিয়া সালমা স্যার।
“মা” শিরোনামে আমার লিখা একটি কবিতার শেষ দুটি চরণ ছিল এরকম……
এতো এতো মা থেকে খুঁজে নিস তাকে
আমার মাকে, তোর মাকে, সারা বিশ্বের মাকে।।
সেই শিশুটি বুঝি আমার কবিতার মাকে খুঁজে পেয়েছিল এতো এতো মা থেকে…….
সবশেষে সুমন চন্দ্র দাশ লিখেছেন, জেলা প্রশাসকের মমতায় বাচ্চাটি কান্না থামালেও বাচ্চাটির মা না কেঁদে আর পারল না। আসুন আমরা সবাই, এভাবে অন্যকে কাঁদিয়ে নিজেরা একটু হাসি প্রতিদিন!!!!!