অস্বচ্ছলতার কারণে কীভাবে ভাল ফল করার পরও অনেকে লেখাপড়া করতে পারে না, বিশেষ করে মেয়েরা; সে বিষয়ে ফেসবুকে লিখেছেন ডা. আমিনুল ইসলাম।
চার বছর আগে রানা প্লাজায় নিহত নাসরীনের কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, আরো একটি মেয়েকে তিনি জেনেছিলেন যিনি এসএসসিতে খুব ভাল ফল করার পরও গার্মেন্টসে কাজ করতে এসেছিলেন।
ডা. আমিনুল তার পোস্টে লিখেছেন: ‘গার্মেন্টসে যখন ডিউটি করতাম, তখন আমার কাজ ছিল কারখানাটিতে চাকরী প্রার্থীদের বয়সের সার্টিফিকেট দেয়া। একবার এক প্রার্থী বয়সের প্রমাণ হিসাবে তার এসএসসি মার্কসশিটটা উপস্থাপন করে আমার সামনে। আমার চোখতো ছানাবড়া! এ আমি কি দেখছি? কি অদ্ভূত ভাল রেজাল্ট মেয়েটার! আমার নিজের রেজাল্টতো এত ব্রিলিয়ান্ট ছিল না। সে কলেজে ভর্তি না হয়ে গার্মেন্টসের চাকরীর প্রার্থী হয়েছে কেন? আমি কিছু বুঝতে পারছিলাম না।
প্রশ্নের জবাবে সে কিছুই বলতে পারছিল না। চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি ছেড়ে দিলো শুধু। নিজেকে সামলে নিয়ে জানালো, একবছর চাকরী শেষে আগামীবার সে আবার গ্রামে গিয়ে কলেজে ভর্তি হবে। উচ্চশিক্ষা সে নিবে- দৃঢ়তার সঙ্গে তাও জানালো। অভিভাবকরা তার পড়ার খরচ চালাবে দূরের কথা- উল্টা সংসারের কিছু দায়িত্ব পালনই তার উপর জরুরী হয়ে পড়েছে। এবছর কিছু টাকা জমাবে। পরের বছর পড়াশুনা শুরু করবে। আমি জানি না আদৌ সে আর তা শুরু করতে পেরেছিল কিনা।
চার বছর আগে ঠিক এদিনে এ সময়ে টিভির খবরে শুনলাম নাসরীন নামের এক মেধাবী ছাত্রী পড়াশুনার খরচ যোগতে কাজ নিয়েছিল সাভারের রানা প্লাজার গার্মেন্টসটিতে। ততক্ষণে সে লাশ।
ভাবছি, স্হান ও কালের কত ব্যবধান- তবু দুটি মেয়ের স্বপ্ন, আকাঙ্খা, দারিদ্র আর অসহায়ত্বে কত মিল!’