চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কর্মক্ষেত্রে শক্তিশালী নীতিমালার অভাবে নারীরা বেতন বৈষম্যের শিকার: ফেসবুক সিওও

লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে ও কর্মক্ষেত্রে শক্তিশালী নীতিমালার অভাবে নারীরা বেতন বৈষম্যের শিকার, এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে নারীদের জন্য আরও শক্তিশালী নীতিমালা তৈরির দাবি জানিয়েছেন ফেইসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) শেরিল স্যান্ডবার্গ।

বিবিসির রেডিও ৪ এ দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে এসব কথা  বলেন। শেরিল নারীদের ক্ষমতায়নকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন।

সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আমরা ছোট মেয়েদের বলি এত অল্প বয়সে নেতৃত্বে যেয়ো না, কিন্তু ছেলে বাচ্চাদের বলি এখন থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে।যা আমরা ভুল করছি। আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেকেরই নেতৃত্বের যোগ্যতা আছে এবং আমাদের সবার উচিত তাদেরকে পছন্দ করতে দেয়া সেকি করতে চায় এবং কী করতে চায় না। কিন্তু সেখানে লিঙ্গের ভেদাভেদ করা ঠিক নয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অফিসগুলোতে নারী পুরুষের বেতনের বৈষম্যে রোধে আমাদের আরো বেশি করে কাজ করতে হবে। আমাকে নিজ-সংশয় নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে্।অনেক ক্ষেত্রে নারীরা ছেলেদের তুলনায় অবহেলিত।এমনকি নারীদেরকে তাদের কর্মক্ষেত্রে বেতন বাড়ানোর জন্য এগিয়ে যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়।মেয়েদের যোগ্যতাকে অবমূল্যায়ন করা হয়। একারণে তারা ভালো বেতন চাইতেও বাধা অনুভব করেন।

নারীদের বেতন বাড়িয়ে দেয়া এবং পাবলিক ও কর্পরেট পলিসি শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করেন শেরিল স্যান্ডবার্গ। চাকরির ক্ষেত্রে পুরুষের সমান নারীও কাজ করছে,নারীরাও অফিসের জন্য পুরুষের সমান অবদান রাখছে বলে জানান তিনি।

sheryl sandbergপরিবারের কারো মৃত্যু হলে নারীদের কাজ প্রসঙ্গে শেরিল স্যান্ডবার্গ বলেন, জীবনের চেয়ে কাজ বড় নয়, মানুষের শোকের সময় তাকে সহায়তা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।তাকে কাজে ফেরানোর জন্য আত্মবিশ্বাসী করা প্রয়োজন।আমি তাদেরকে সময় দেই, বলি শোক কাটিয়ে আপনার সময়মত আপনি কাজে ফিরবেন। সাক্ষাতকারের এক পর্যায়ে স্যান্ডবার্গ তার স্বামীর মৃত্যু নিয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, ২০১৫ সালে তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি অনেকটাই বদলে গেছেন। এখন ফেইসবুক কর্মীদের কোনো নিকট আত্মীয় মারা গেলে তিনি তাদেরকে আগের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ ছুটি দিয়ে থাকেন।

২০১৫ সা্লে তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তার দুই সন্তানের কথা স্মরণ করে আবেগ প্রবণ হয়ে যান। শেরিল স্যান্ডবার্গ ২০১৩ সালে তার নারীদের ক্ষমতায়ণ বিষয়ক গ্রন্থ ‘লিন’ নামক বইটি জন্য বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার লিখিত এই বইটি সেসময় সবচেয়ে বেশি বিক্রি তালিকায় স্থান পায়।

সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক। ২০১২ সালে তিনি প্রথম এবং একমাত্র নারী হিসেবে ফেসবুকের পরিচালনা পরিষদে যোগদান করেন এবং ফেসবুকের পরিচালনা পরিষদের প্রথম নারী সদস্যের নাম ‘শেরিল স্যান্ডবার্গ’ যিনি প্রযুক্তি দুনিয়ার প্রভাবশালী নারীদের মধ্যে অন্যতম। ২০১২ সালে তিনি টাইমস ম্যাগাজিনের মতে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জনের মধ্যে তালিকাভুক্ত হন। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্যানুসারে তার সম্পত্তির পরিমাণ ১ বিলিয়ন আমেরিকান ডলারেরও বেশি। ফেসবুক ছাড়াও তিনি দ্যা ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি, উইমেন ফর উইমেন ইন্টারন্যাশনাল, সেন্টার ফর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট এবং ভি-ডে-এর পরিচালনা পরিষদের সদস্য।