রাজধানীতে উল্টোপথে গাড়ি চালানোর দায়ে নিয়মিতই মামলা ও জরিমানা করা হলেও বিশেষ করে ভিআইপিদের উল্টোযাত্রা বন্ধ করতে পারছিল না পুলিশ। বিষয়টি সড়কে যানজটের অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত। তাই এর বিরুদ্ধে এবার জোরালো অভিযান শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গত কয়েকদিনে এরকম অভিযানে যাদের গাড়িকে উল্টোপথে যাবার সময় আটকানো হয়েছে তাদের অনেকেই উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা। এছাড়াও ছিল প্রতিমন্ত্রী, সাংসদ, সচিব, প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ, পুলিশ, সাংবাদিক, বিচারক ও ব্যবসায়ীদের গাড়ি। এদের প্রায় সকলেই তখন গাড়িতে ছিলেন। এমনকি সরকারের একজন সচিবের গাড়ি পরপর দু’দিন উল্টো পথে চলার দায়ে ধরা পড়ে। অথচ এসব সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব হচ্ছে আইনের রক্ষক হয়ে সাধারণ মানুষকে আইন মানার ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করা। কিন্তু তারা তা না করে আইন অমান্য করলেও এসব ঘটনায় মামলা ও জরিমানা উক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে না হয়ে শুধু চালকদের বিরুদ্ধে হয়েছে বলে জানা যায়। আমরা মনে করি, উল্টো পথে চলা এসব ভিআইপির বদলে চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার এই ঘটনা ক্ষমতাসীনদের অবৈধভাবে ক্ষমতা চর্চ্চার পথ বন্ধ করবে না। কেননা তারা ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী বলে পার পেয়ে যাবেন, এই ঘটনার পর বিষয়টি তাদের মনে আরও বদ্ধমূল হয়ে যেতে পারে। তাই এ ধরনের আকস্মিক অভিযান দীর্ঘমেয়াদে কোন সুফল বয়ে নাও আনতে পারে। ক্ষমতাধরদের উল্টো পথে চলা বন্ধ করতে চলমান অভিযান প্রশংসাযোগ্য হলেও ক্ষমতাবানদের বিরুদ্ধে মামলা না হওয়ার বিষয়টি অনেকের কাছে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তারা নিজেরা যখন গাড়িতে ছিলেন তখন শুধু চালকের উপর দোষ চাপানো যুক্তিযুক্ত নয়। তাই এখন থেকে এ বিষয়ে পুলিশ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা আরও বেশি মনোযোগী হবেন বলে আমরা আশা করি। পাশাপাশি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রভাব-প্রতিপত্তির জোরে আইন না ভেঙে সঠিক পথে চলার জন্য আমরা আহ্বান জানাই।