‘হে খোদা, তুমি আদরে আদরে রাখিও মোদের শোয়া চান পাখিটারে।’-প্রখ্যাত বংশীবাদক ও সংগীতশিল্পী বারী সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে এভাবেই খোদার কাছে ফরিয়াদ জানিয়েছেন সংগীতপরিচালক, সুরকার ও প্রখ্যাত গীতিকার ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল। শুধু তাই না, বাংলা লোক গানের প্রবাদপুরুষ বারী সিদ্দিকী সবার হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন বলেও বিশ্বাস করেন তিনি।
বারী সিদ্দিকী নাই, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তার মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান গোটা সংগীত জগত। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বারী সিদ্দিকী অন্যের সঙ্গে বাজিয়েছেন, পরবর্তীতে তার সঙ্গে অনেকে ইনস্ট্রুমেন্ট বাজিয়েছেন তার না থাকার সকালে এদিন সবাই এসে তার নিথর দেহের সামনে চুপ দাঁড়িয়ে থাকেন। হয়তো তাকে স্মরণ করেন অপার মহিমায়, বা বিশেষ কোনো স্মৃতি মনে করে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে হয়ে যায় তার প্রথম জানাজা। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় নিয়ে যাওয়া হয় তার কর্মস্থল বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রাঙ্গনে। এই দুই জায়গাতেই তার জানাজায় উপস্থিত হন দেশের প্রখ্যাত শিল্পী ও মিউজিশিয়ানরা। তাকে স্মরণ করে গণমাধ্যমের কাছে স্মৃতিচারণও করেন কেউ কেউ। ফকির আলমগীর, নকীব খান, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, শহীদুল্লাহ ফরায়েজি, কিরণ চন্দ্র রায় ছাড়াও এসময় এই সময়ের অনেক মিউজিশিয়ান উপস্থিত ছিলেন। বেলা সোয়া এগারোটার দিকে ঢাকা থেকে বারী সিদ্দিকীর জন্মস্থান নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তার বড় ছেলে সাব্বির সিদ্দিকী। নেত্রকোনা সরকারি কলেজ মাঠে তৃতীয় জানাযা শেষে তার নিজ গ্রাম কালিগ্রামের চল্লিশা বাজারের নিজের গড়া ‘বাঊল বাড়ি’তে দাফন করা হবে।
তারআগে চোখের কোনে কিছুটা জল লুকিয়ে বারী সিদ্দিকীকে নিয়ে কিছু বলতে বললে সংগীতশিল্পী কিরণ রায় বলেন, কণ্ঠে কিংবা বাঁশিতে বারী সিদ্দিকী ছিলেন অসাধারণ। তিনি বড় মাপের গুণী শিল্পী ছিলেন। তারসঙ্গে আমার কতো যে স্মৃতি…!
অন্যদিকে গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়েজিও বারী সিদ্দিকীর এই মৃত্যুকে যেন মেনে নিতে পারছেন না। ঢাকা থেকে বারী সিদ্দিকীর মরদেহের সঙ্গে তিনিও সওয়ার হয়েছেন নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে। যাওয়ার আগে বলে গেলেন, বারী ভাই তার সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকবেন।