চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

তামিমের কাছে বিপিএলের আগে জাতীয় দল

সাউথ আফ্রিকা সফরে প্রস্তুতি ম্যাচে পাওয়া চোট বয়ে বেড়িয়েছেন টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজজুড়ে। তামিম ইকবাল তবু ঝুঁকি নিয়েই খেলেছেন প্রথম টেস্ট ও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। বাঁ-ঊরুর চোটটা বাড়ায় টি-টুয়েন্টি সিরিজের আগে দেশে ফিরে এসেছেন। তবে বিপিএলে ঝুঁকিটা নিতে চান না বাঁহাতি ওপেনার। দিন দশেক পরেই মাঠে গড়াবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্টটির পঞ্চম আসর। শতভাগ ফিট না হয়ে তাতে নামবেন না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক।

মঙ্গলবার দুপুরে বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর সঙ্গে চোট-পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন তামিম। সামনের দুই সপ্তাহ থাকতে হবে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায়। বিপিএল গড়াচ্ছে ৪ নভেম্বর থেকে। তামিম নিশ্চিত, শুরুর দিকের কয়েকটি ম্যাচ খেলা হবে না তার। সেটা নিয়ে অবশ্য আক্ষেপ নেই। বলেছেন, সবার আগে দেশ। জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ। সেখানে ফিট থেকে খেলতে পারায় চোখ তামিমের।

বিসিবিতে এসে চোট, সাউথ আফ্রিকা সিরিজে বাংলাদেশের ব্যর্থতা ও শিক্ষা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তামিম। সেটির চুম্বক অংশ চ্যানেল আই অনলাইনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।

আপনার শারীরিক অবস্থা কেমন?

সামনের দুই সপ্তাহ পুনর্বাসনে থাকতে হবে। তারপর আবার পরীক্ষা করা হবে। প্রথমে যে পরিকল্পনা ছিল, হয়ত বিপিএলের প্রথম কয়েকটা ম্যাচে নাও খেলতে পারি। এখনই বলাটা জলদি হয়ে যায়। কারণ পুরোপুরি পুনর্বাসনের পর দেখব কী অবস্থা, কয়টা ম্যাচ মিস হবে হয়ত তখন বলতে পারব। এটা নিশ্চিত, প্রথম দুই ম্যাচ খেলতে পারব না।

পুরোপুরি সেরে না উঠে খেলা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?

আমার মেসেজটা খুবই পরিষ্কার। আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল জাতীয় দল। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ার আগ পর্যন্ত মনে হয় না আমার খেলা উচিত হবে। আমি সেই কাজ করবও না। মেডিকেল স্টাফও মনে হয় না কোনও ধরনের ক্রিকেটে খেলার ছাড়পত্র দেবে পুরোপুরি ফিট হওয়ার আগে। বিপিএল সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা টুর্নামেন্ট। কিন্তু জাতীয় দলেরও খেলা আছে। ওটা আমার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীলঙ্কার সাথে বড় সিরিজ হবে। যতগুলো বিপিএল ম্যাচ মিস হোক না কেন, পুরোপুরি সুস্থ হয়েই নামব।

সাউথ আফ্রিকায় বাজে পারফরম্যান্সের পর জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের বিপিএলে পারফর্ম করা চ্যালেঞ্জিং হবে কিনা?

আশা করি কঠিন হবে না। ওয়ানডে ও টেষ্টে আমাদের সেরা সামর্থ্যটা দিয়ে কেউ পারফর্ম করতে পারিনি। সবকিছু থেকেই মানুষ শিক্ষা নেয়। আমাদের জন্য বড় শিক্ষা সফর ছিল সাউথ আফ্রিকা। ভুল-ত্রুটি যা ছিল আমাদের, আমি নিশ্চিত ব্যাটসম্যান-বোলার, সবাই কম-বেশি বুঝতে পেরেছি। এখনও দুটা ম্যাচ বাকি আছে। আশা করব ওই ফরম্যাটে দল ভাল কিছু করবে। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, একটা বাজে সফল হল যাতে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলেতে পারিনি, সেটা ভুলে গেলে হবে না। এটা মাথায় রেখেই সামনে কাজ করতে হবে।

এখন কী করা উচিত?

পুরো দল তো দেশে আসেনি। আমি এসেছি ইনজুরির কারণে। একটা বাজে সফর হিসেবে চিন্তা করে যদি ভুলে যাই, তাহলে কিন্তু আমরা উন্নতি করব না। সেখানে কী ত্রুটি ছিল, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। সেটার উপরে পরিকল্পনা করে আগাতে হবে। ২০১৯ বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে। সেখানে খেলাও কঠিন হবে আমাদের জন্য। এসব মাথায় রেখে আগাতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমরা যে যেরকম সমস্যা অনুভব করেছি, সেটায় উন্নতি করতে যা করা দরকার করতে হবে। না করলে তো আমরা আগাব না।

সাউথ আফ্রিকায় কঠিন হবে এটা সবাই জানত। এতটা কঠিন হবে সেটা কি বুঝতে পেরেছিলেন? ফলাফল দেখে আপনি কতটা হতাশ?

কন্ডিশন কঠিন হবে সেটা আমরা সবাই জানতাম। কিন্তু কন্ডিশনকে দোষ দিয়ে বা আমরা ওখানে অনেক দিন যাইনি এসব অজুহাত হিসেবে দেখাতে চাই না। আমার কাছে মনে হয় দল হিসেবে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমরা যতটা সক্ষম, আমরা সেটা খেলেতে পারিনি। দল হিসেবে বা ব্যক্তিগতভাবে খেলতে না পারলে ওটা কোন বিষয় নয় যে আমরা দেশে খেলছি না বিদেশে। সেখানে কন্ডিশন অবশ্যই একটু ভিন্ন ছিল, চ্যালেঞ্জিংও ছিল। কিন্তু আমরা এরচেয়েও ভাল পারফর্ম করতে পারতাম।

কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কথা শুনেছি বিভিন্ন মিডিয়ায়। বিষয়টা যদি একটু পরিষ্কার করতেন?

সেটা পরিষ্কার করার জন্য কিছু একটা তো ঘটতে হবে। মিডিয়াতে তো বোর্ড থেকে চিঠিও গেছে, এরকম কোনও কিছু ঘটেনি। আমার জন্য জিনিসটা খুবই হাস্যকর। একটা জিনিশ ৫ পার্সেন্ট হলেও সেটাকে মানুষ ২৫-৩০ পার্সেন্ট বানিয়ে দেয়। তখন না হয় সেটা মেনে নিতাম। কিন্তু যেটা ঘটছে শূন্য পার্সেন্ট, সেটাকে যদি কিছু বানিয়ে দেন, হাসা ছাড়া কোনও কিছু করার থাকে না। আমার সাথে তার (হাথুরুসিংহে) কোনও সমস্যা নেই, তার সাথেও আমার কোনও সমস্যা নেই। জিনিসটা যে কেন হল, এটা দুঃখজনক। হাস্যকর একটা ঘটনা।