দিলদার আহমেদসহ আপন জুয়েলার্সের তিন মালিককে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। অর্থ পাচারের অভিযোগে রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের করা পাঁচ মামলার মধ্যে তিন মামলায় তারা জামিন পেলেন।
অন্য দুই মামলা স্ট্যান্ডওভার রেখেছেন আদালত। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার আদেশ দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস । রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ বলেন, মোট পাঁচটি মামলার মধ্যে দুটি মামলা এক মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রেখে তিন মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাইকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ তিনটি মামলার মধ্যে রমনা থানার মামলায় জামিন পেয়েছেন। তবে আরো দুটি মামলায় জামিন না থাকায় তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।
গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দুইটি মামলা হয়েছিল। এ দুই মামলা থেকে তারা জামিন পেয়েছেন। ফলে এ দুজনের মুক্তিতে বাঁধা নেই। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে যাবে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ।
গত ২২ নভেম্বর আপন জুয়েলার্সের মালিকদের কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট।
বনানীর একটি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের নামে ডেকে নিয়ে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গত মে মাসে গ্রেফতার হন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদারের ছেলে সাফাত আহমেদ।
বর্তমানে কারাগারে থাকা সাফাতসহ তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই আপন জুয়েলার্সের ‘অবৈধ লেনদেন’ এর খোঁজে তদন্তে নামে শুল্ক গোয়েন্দা।
মে মাসের শেষ দিকে আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শোরুম থেকে ১৫ দশমিক ৩ মণ সোনা এবং ৭ হাজার ৩৬৯ টি হীরার অলঙ্কার জব্দ করে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে গত ১২ আগস্ট আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই দিলদার আহমেদ, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার সহ বিভিন্ন অভিযোগে গুলশান, ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় পাঁচটি মামলা করা হয়।
দুই মামলায় গত ২২ আগস্ট তিন ভাই হাই কোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। এরপর বিচারিক আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় গত ২৩ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
এর পরদিন আত্মসমর্পণ করলে তাদের কারাগারে পাঠান আদালত। এর বিরুদ্ধে হাই কোর্টে পাঁচ মামলায় জামিন আবেদন করেন আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাই।