জলবায়ু তহবিলের ৬০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবধান নিয়ে উন্নত আর উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে জোরালো বিতর্ক শুরু হয়েছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে। উন্নত দেশগুলো ৬২ বিলিয়নের দাবি করলেও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো বলছে, দুই বিলিয়ন ডলার দিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছে উন্নত দেশগুলো।
জলবায়ু পরিবতর্নের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সহায়তায় ২০২০ সালের মধ্যে ১শ’ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার কথা উন্নত দেশগুলোর। সেই অর্থ দেয়ার বিষয়ে তেমন অগ্রগতি না হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোর পক্ষে দাবি করা হয়েছে, প্রতিশ্রুত অর্থ পর্যায়ক্রমে দিতে শুরু করেছেন তারা।
তবে ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মাত্র দুই বিলিয়ন ডলার দিয়েই ৬২ বিলিয়নে দেয়ার দাবি করছে উন্নত দেশগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জে টিমাস রবার্টস বলেন, একটি প্রতিবেদনে ধনী দেশসমূহ বলছে তারা ২০১৪ সালের মধ্যেই ৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে অর্থের পরিমাণ ৬২ নয়, দুই বিলিয়ন।
সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে, সাধারণভাবে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে যে সহায়তা উন্নত দেশগুলো এতদিন দিয়ে আসছিল তা জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দ বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এমনকি কোনো কোনো ঋণও এ তহবিলের অংশ হিসেবে দেখানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ মিজান আর খান বলেন, “জলবায়ু তহবিলের একটি বিরাট সমস্যা হচ্ছে, উন্নত দেশগুলো যত টাকা দেয়া হয়েছে বলে, উন্নয়নশীল দেশের হিসেবে দেখা যায় তার সঙ্গে পরিমাণের দিক থেকে বিশাল পার্থক্য। উন্নত দেশ বলে ৫০ বিলিয়ন ডলার, আমরা সেখানে ৫ বিলিয়ন ডলারও দেখছি না। এই হিসেব প্রক্রিয়ার মাঝেই কিছু ফাঁকিঝুঁকি আছে। অথবা প্যারিস চুক্তির অধীনে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা চলছে।”
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু বলেছেন, জলবায়ু তহবিলের ব্যাপারটি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো সন্তুষ্ট নয়।
“কারণ এই তহবিল দ্রুত ছাড়া হচ্ছে না। এবং যে পরিমাণে পাওয়ার কথা ছিল সেটাও আমরা পাচ্ছি না। সব মিলিয়ে তহবিলটি যেন দ্রুত পাওয়া যায় এবং এর দ্রুত একটা ব্যবস্থা হয়, সেটা নিয়েই আমরা সোচ্চার। এ বিষয়েই এবারের সম্মেলনে কথা হচ্ছে।”
“সবচেয়ে বড় কথা হলো, জলবায়ু তহবিল যদি আমরা তাড়াতাড়ি না পাই তাহলে কিন্তু আমরা অনেক ব্যাপারেই পিছিয়ে যাচ্ছি। জলবায়ু সম্পর্কিত আমাদের যে সব সমস্যা রয়েছে সে ব্যাপারে আমাদের কাজগুলোও এগোচ্ছে না,” বলেন মুকিত মজুমদার বাবু।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে দাবি করা হয়েছে, জলবায়ু তহবিলের অর্থ দেয়ার জন্য কার্বন ট্যাক্স-এর মতো তহবিল বাড়ানোর কমসূচি নিশ্চিত করা দরকার।
রিপোর্টটি দেখতে নিচের ভিডিওতে ক্লিক করুন।
https://www.youtube.com/watch?v=-Vu_5HNqPe0