গুলশানের হলি আর্টিজানে নারকীয় জঙ্গি হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছিল, জঙ্গিবাদ থেকে ফিরে এলে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সাহায্য করা হবে। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেক পরিবারই তাদের পথভ্রষ্ট সন্তানদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা ও তাদের আহ্বান করে আসছিল। অনেক পরিবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিয়ে সহায়তাও করেছে। আজ র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কুর্মিটোলায় র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা জঙ্গিবাদ থেকে ফিরে আসবে তাদের সবার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। ওরা যেন ঠিকভাবে নিজেদের জীবন আবার গুছিয়ে নিতে পারে সেজন্য সবাইকে সহায়তা করতে হবে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে যে যা করতে চায়, সে অনুযায়ী তাদের অর্থসহায়তাসহ আইনী সহায়তা দেয়া হবে। তবে জঙ্গিবাদের মতো বৈশ্বিক গুরুতর অপরাধে জড়িত বা অনুসারীরা কীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে কিছুটা সংশয়, আইনী প্রেক্ষাপটেও হতে পারে জটিলতা। রাজধানীর কাফরুল থানায় এক বাবা তার দুই ছেলেকে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার সন্দেহে গত ২৫ মার্চ থানায় সোপর্দ করেছিলেন। আইন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজির করার বিধান থাকলেও তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয় ১১ এপ্রিল। শুধু তাই না, ২১ মার্চ বাড্ডা থানায় করা একটি মামলায় র্যাব ওই দু’জনকে গ্রেপ্তার দেখায়। এখন ছেলেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ওই বাবা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া খুবই জরুরি বলে আমরা মনে করি। জঙ্গিবাদের মতো ক্রমবর্ধমান সমস্যায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আহ্বান ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুবই আশাব্যাঞ্জক। জঙ্গি ও তাদের অনুসারীদের মাঝে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বানের প্রকৃত বাস্তবায়নের পথে যেন কোনোরকম দ্বিধা ও সংশয় তৈরি না হয়, তার দিকে নজর দেয়া জরুরি। কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও আশ্বাস-আহ্বানের খেলাপ পুরো ব্যাপারটিকে যেনো ভেস্তে না দেয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ মনোযোগী হবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।