চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

চাল পেঁয়াজের পর এবার ঊর্ধ্বমুখী মসলার দাম

চাল, পেঁয়াজের পর কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে মসলার বাজার।ব্যবসায়ীরা বলছে, বাজেটে মসলা আমদানির শুল্ক বাড়ানো ফলে জিরা, গোলমরিচ, এলাচিসহ বেশ কিছু মসলার দাম বেড়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দর বৃদ্ধি ও ঈদে চাহিদা বেশি থাকায় দাম কিছুটা বাড়তি। তবে ঈদে বাড়তি চাহিদা থাকায় পাইকাররা বিভিন্ন অযুহাতে কৌশলে দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের।

কিন্তু পাইকাররা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে মসলার দাম কিছুটা বাড়লেও চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দামে তেমন প্রভাব পড়বে না। দাম স্বাভাবিক থাকবে।

রাজধানীর মসলার পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি জিরা ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩শ ৫৫ থেকে ৪শ টাকায়, কালো গোল মরিচ ৬শ ৮০ টাকা থেকে ৭শ টাকায়, দারুচিনি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২শ ৩০ টাকা থেকে ২শ ৭০ টাকা। আর এলাচি কেজিতে ১শ থেকে দেড়শ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৩শ থেকে ১ হাজার ৬শ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেজপাতা ৯০ টাকা থেকে ১শ ৩০ টাকায়, সাদা গোল মরিচ ৯শ থেকে সাড়ে ৯শ টাকা, জয়ফল ৬শ ৫০ টাকা থেকে ৯শ ৫০ টাকায়, কিসমিস ২শ ৬৫ টাকা থেকে ২শ ৭৫ টাকা, আলু বোখারা ৪শ ৬০ টাকা থেকে ৪শ ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারের মসলার দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও।

কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও শ্যামবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪শ থেকে ৪শ ৫০ টাকা, দারুচিনি ৩শ টাকা থেকে ৩শ ৫০ টাকা ও এলাচি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪শ টাকা থেকে ১ হাজর ৭শ টাকায়, তেজপাতা দেড়শ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ সাড়ে ৯শ ৮০ থেকে ১ হাজার টাকা, কালো গোল মরিচ ৮শ টাকা থেকে সাড়ে ৮শ টাকায়।

সাধারণত কোরবানি ঈদে জিরা, এলাচি ও দারুচিনিসহ এসব মসলার চাহিদা বেশি থাকে। আর ব্যবসায়ীরাও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নেয় অতিরিক্ত দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। চাল ও পেঁয়াজের পর এখন মসলার দামও বাড়ছে। এরপরও সরকারি কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে বাজারে।

হাতিরপুলে মসলা কিনতে এসে ক্রেতা মামুন হাসান বলেন, সাধারণ ক্রেতাদের পকেট কেটে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এই নিয়ে যেন সরকারের কোনো মাথা ব্যথা নেই। কারওয়ান বাজারের রামগঞ্জ স্টোরের খুচরা বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, ঈদকে ঘিরে অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাইকাররা দাম বাড়াচ্ছেন। গুটিকয়েক আমদানিকারকের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তাদের ওপর নির্ভর করছে বাজারে মসলার দাম।

তিনি বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন বাজেটে বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে, এ কারণে মসলার দাম বাড়ছে। একই কথা জানালেন হাতিরপুল বাজারের মসলা বিক্রতা রহিম। তিনি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে বেশকিছু মসলার দাম বেড়েছে। ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ দাম বেড়েছে। এর জন্য পাইকাররা দায়ী।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী এনায়েতুল্লাহ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে। বাজার উঠানামা করবে- এটাই স্বাভাবিক। পুঁজিবাজারে যেরকম দর উঠানামা করে এখানেও তাই। তাছাড়া মসলা আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

তবে আগের তুলনায় এখনও দাম অনেক কম রয়েছে। যেমন, সাদা গোল মরিচ কেজি প্রতি দাম ১হাজার ৩শ টাকা থেকে ১ হাজার ৪শ টাকা ছিল। এটা গত মাস পর্যন্ত ৭শ ৫০ থেকে ৮শ টাকায় নেমে এসেছিল। কিছুটা বেড়ে এখন ৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এলাচি স্বাভাবিক দরের চেয়ে ২শ টাকা কমে বেড়েছে মাত্র ১শ টাকা।

ঈদকে ঘিরে এসব মসলার দাম হাতের নাগালে থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা অন্যান্য সময়ের তুলনায় একটু বেশি থাকে। তাই দাম কিছুটা বাড়ে। তবে আমার জানামতে এবার পর্যাপ্ত মসলা আছে। সংকট হওয়ার কথা নয়।