চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ঘরছাড়া কিশোর ভক্তের জন্য তামিমের ভালোবাসা

মিরপুর স্টেডিয়ামের দুই নম্বর গেটে এক কিশোর কান্নাকাটি করছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন। তাকে ঘিরে মানুষের হৈ-চৈ। সেই হৈ-চৈ শেষে ছেলেটি একসময় নিজেকে আবিষ্কার করে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বুকে!

মোহাম্মদ তামিম। দশম শ্রেণির ছাত্র। মা, বোন আর ভাইয়ের সঙ্গে পশ্চিম কাজীপাড়ায় থাকে। ক্রিকেট আর তামিম ইকবালের প্রতি এমনই নেশা স্কুলে সবাই তাকে ‘তামিম ইকবাল’ বলে ডাকে।

তামিমের খুব ইচ্ছা একবার স্বপ্নের নায়ক তামিমকে দেখবে। বাসায় বায়না ধরে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচ দেখতে যাবে। তিতুমীর কলেজে পড়ুয়া বোনের সেটা একদম পছন্দ হয়নি। ছোট ভাইকে রাগের মাথায় বেশ মারধরও করেন তিনি। মোহাম্মদ তামিম তারপর ঘরছেড়ে বেরিয়ে যায়। স্টেডিয়ামের সামনে এসে কাঁদতে থাকে।

কিশোর তামিমকে কাঁদতে দেখে কয়েকজন পুলিশ এগিয়ে যান। তারা সব শুনে জাতীয় দলের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা হাসিব রহমান স্বর্ণকে জানান।

‘পুলিশ সদস্যরা আমাকে অনুরোধ করেন ছেলেটিকে একবার তামিম ভাইয়ের কাছে নিয়ে যেতে। ওর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে আমারও খারাপ লাগছিল। খেলা শেষ হওয়ার পর তামিম ভাইকে আমি ছেলেটির কথা বলি। সব শুনে তিনি আপ্লুত হন।’ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলছিলেন হাসিব রহমান।

তামিম ইকবালকে দেখে কিশোর তামিম কেমন যেন ঘোরের ভেতর হারিয়ে যায়। শুক্রবার সকালে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময়ও তার সেই ঘোর কাটছিল না, ‘আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। কখন যে উনাকে জড়িয়ে ধরেছি টেরই পাইনি। আমি খুব খুশি। উনি আমাকে একটা জার্সি দিয়েছেন। ওটা সারা জীবন যত্ন করে রেখে দিব।’

তামিম ইকবাল শুধু জার্সি দিয়েই থামেননি। ছেলেটির বাসায় ফোন দিয়ে কথা বলেন। তার ভাইয়ের কাছে ‘নির্যাতনে’র কারণ জানতে চান। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে কথা দেয়া হয়, আর কোনোদিন কেউ তামিমকে মারধর করবে না।
মূর্তিকারিগর

‘মা তখন বাসায় ছিল না। পরে শুনেছে তামিম ভাইয়া ফোন করেছিলেন। উনি খুব খুশি। আপুও বলেছে আর আমাকে মারবে না,’ তামিমনামা বলতে বলতে কিশোর তামিমের উচ্ছ্বাস আর থামে না, ‘তামিম ভাইয়া অনেক ভাল। অনেক। আজ তো শুক্রবার। বন্ধুদের সব বলতে পারছি না। স্কুলে গেলেই সবার কাছে গল্প করবো।’

সেই গল্পের নাম কী দিবে?

মোহাম্মদ তামিমের ঝটপট উত্তর, ‘আমার বন্ধু তামিম…।’