গুলশানের জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশী নাগরিক হত্যার পর বড় ঝুঁকিতে পড়তে পারে বাংলাদেশের ২৬ বিলিয়ন ডলারের গার্মেন্টস শিল্প। পশ্চিমা ক্রেতারা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক পর্যালোচনা করতে পারে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতা ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে হফিংটনপোস্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ গরিব রাষ্ট্র, তার বৈদেশিক আয়ের ৮০ শতাংশ আসে পোশাক রপ্তানি থেকে। এই সেক্টরে দেশের ৪০ লাখ কর্মী নিয়োজিত এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো ইউরোপে পোশাক রপ্তানিতে শুধু চীনই তাদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
অনন্ত গার্মেন্টেসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শহিদুল হক মুকুল রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এই ঘটনা স্পস্টভাবেই আমাদের উপর প্রভাব ফেলবে। নিরাপত্তাজনিত কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও চায়নার মতো দেশের আমদানিকারকরা আমাদের দেশে আসতে সতর্ক হবে।’
তিন বছর আগে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১১শ’র বেশি শ্রমিক নিহত হওয়ার পর নিরাপত্তার কারণে অনেক ফ্যাক্টরি তাদের রপ্তানি বাণিজ্য হারায়। তবে ওই ঘটনার পর বাংলাদেশের গার্মেন্টস আবার দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানি ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কিন্তু হফিংটনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রানা প্লাজার চেয়ে শুক্রবারের ঘটনা বিদেশীদের জন্য আরো বড় চ্যালেঞ্জ। হামলাকারীরা এমন একটি জায়গায় হামলা করেছে সেখানে বিদেশীদেরই বেশি যাওয়া-আসা ছিল।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এরকম ভয়ঙ্কর ঘটনা কখনোই ঘটেনি। এটা আমাদের ভাবমূর্তির প্রতি ভয়াবহ চপেটাঘাত। এই ঘটনা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। তবে কি পরিমাণ চাপ পড়বে সেটা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’
ফরাসি-ভিত্তিক একটি পোশাক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী বলেছেন, আগামী দিনে ব্যবসায় একটি গভীর মন্দা ভয় করছি।
কিন্তু অন্যান্য শিল্পখাতে জড়িত ব্যক্তিরা বলেছেন, নিরাপত্তা উদ্বিগ্নতা কাটাতে পশ্চিমা গ্রাহকদের সঙ্গে বাংলাদেশের বাইরে বৈঠক হতে পারে। যেমন সিঙ্গাপুর বা হংকংয়ের মতো এশিয়ার শহরগুলোতে এটা হতে পারে। কিছুদিন আগেও এই রকম আলোচনা শুরু হয়েছিল।
এক্সপোর্টার ব্রাদার্স ফ্যাশন লিমিটেডের প্রধান আব্দুল্লাহ হিল রাকিব বলেন,‘কয়েকমাস মাস বিদেশী নাগরিকদের কর্তৃক আমাদের কারখানা পরিদর্শন, সভা ইত্যাদি হবে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এই উদ্বেগ প্রশমিত হবে এবং সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।’