অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, খাদ্যের অভাবে চলে যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবে দৃষ্টি গেছে স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিকে। কারণ এখনও পুষ্টির যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই স্বাস্থ্য রক্ষায় পুষ্টির দিকে নজর দিতে হবে।
শুক্রবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি ইনস্টিটিউটে ফল প্রদর্শনী ও ফলদ বৃক্ষরোপণ পক্ষ ২০১৭’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এবার ‘স্বাস্থ্য পুষ্টি অর্থ চাই, দেশি ফলের গাছ লাগাই’ প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ফল মেলা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এসডিজির লক্ষ্য ভালোভাবে অর্জন করতে পুষ্টির দিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। পুষ্টির ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পারলে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া যাবে।
দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কোনো খাদ্যাভাব নেই। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এদেশের মানুষের প্রচেষ্টায় খাদ্যাভাব দূর হয়েছে।
তবে খাদ্যাভাব দূর করার পেছনে আধুনিক প্রযুক্তি ও গবেষণার অবদান রয়েছে উল্লেখ করে মুহিত বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ও গবেষণা ছাড়া আমাদের মতো দেশে যেখানে অনবরত জনসংখ্যা বাড়ছে, ফসলের জমি কমছে; সেখানে খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আধুনিক প্রযুক্তির বিকল্প নেই। তাই কীভাবে কম জমিতে বেশি ফলন করা যায়, সেসব প্রযুক্তি আমাদের আরও বেশি করে উদ্ভাবন করতে হবে।
তিনি বলেন, এখনও পুষ্টির যথেষ্ট অভাব রয়েছে। স্বাস্থ্য রক্ষায় পুষ্টির দিকে নজর দিতে হবে। এর কারণে নতুন প্রজন্মের অসুবিধা হয়। কারণ যেভাবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি পুষ্টির দিকে সেভাবে নজর দিতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রচলিত ও অপ্রচলিত ৭০টি ফল উৎপাদন হয়। এসব ফল মাত্র চার মাস উৎপাদন হলেও এ চার মাসকে আমরা আট মাস করে দিয়েছি। এখন ৪০ ভাগ ফল আট মাসে পাওয়া যায়। এ ৪০ ভাগ ফলকে কীভাবে ৮০ ভাগে নিয়ে যেতে পারি সেটাই লক্ষ্যমাত্রা হওয়া উচিত।
অনুষ্ঠানে ফল ও সবজির বাগান তৈরির সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার এখন বেশি নজর দিচ্ছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, কিভাবে ফল ও সবজির বাগান বাড়ানো যায় সে চেষ্টা করছি আমরা। এরইমধ্যে দেশের ৪০ ভাগ ফলের উৎপাদন ৮ মাসব্যাপী নিয়ে আসো হয়েছে।
তবে ফলের উৎপাদন আরও বাড়াতে হলে দেশীয় কৃষকদের তৈরি সাধারণ প্রযুক্তিগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। এ লক্ষ্যে কৃষি বিজ্ঞানীদের আরও বেশি করে পরীক্ষা ও প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে মনোযোগ বাড়ানো জরুরী।
কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ ফল প্রদর্শনী ও ফলদ বৃক্ষরোপণ পক্ষ আগামী ১৮ জুন শেষ হবে। আর ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত।
রাজধানীর আ ক মু গিয়াস উদ্দিন মিল্কী অডিটোরিয়ামে ফল প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৭৫টি স্টল রয়েছে প্রদর্শনীতে। এসব প্রতিষ্ঠান দেশি ও বিদেশি প্রায় ১৩০ প্রজাতীর ফল প্রদর্শন করছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম মোফাজ্জল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোশারফ হোসেন।