বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে অফিসার পদে নিয়োগে প্রাথমিক বাছাইয়ের (প্রিলিমিনারি) ফল পুনর্মূল্যায়নের আবেদন গ্রহণ করেনি ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি। শুধু তাই নয়, ফল পুনর্মূল্যায়নের কোন সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন কমিটির সদস্য সচিব।
বুধবার বিকেলে ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি নিয়ে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্য-সচিব (মহাব্যবস্থাপক) মোঃ মোশারফ হোসেন খানের সঙ্গে তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করে দুই শতাধিক পরীক্ষার্থীর স্বাক্ষরসহ আবেদনপত্র দিতে গেলে তিনি তা গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছেন তিতুমীর কলেজ থেকে পাশ করা জহিরুল ইসলাম।
তিনি ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আমরা আবেদনপত্রটি নিয়ে মোশারফ হোসেন খানের সঙ্গে দেখা করলে তিনি আমাদের নম্বরপত্র বের করে দেখান। তখন আমরা বলি আমাদের সমস্যা নম্বরে নয়, ওএমআরে (অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন)। মূল্যায়নে কোন ভুল থাকতে পারে।
‘‘তখন তিনি আমাদের বলেন যে মূল্যায়নে কোন ধরনের ভুল হয়নি। তোমরা যদি পুনর্মূল্যায়ন করতে চাও তবে এক লাখ টাকার চেক জমা রাখো। যদি ফলে ভুল বের হয় তবে তা ফেরত পাবে এবং নতুন করে ফল প্রকাশ করা হবে। কিন্তু যদি ভুল না হয় তবে তোমাদের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে।”
তবে প্রিলিমিনারি ফল প্রস্তুতের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ভুল হয়নি বলে আবাও দাবি করেছেন মোশারফ হোসেন খান।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: আগে আমাদের একটি ভুল হওয়ায় আমরা এবার খুবই সতর্ক ছিলাম। ভুল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই পুনর্মূল্যায়নেরও প্রশ্ন নেই।
‘‘পরীক্ষা দিলে সবাই আশা করে যে প্রথম শ্রেণি পাবে। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা যায় সে দ্বিতীয় শ্রেণি পেল। তাই অনেকের হয়তো ভালো প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু কাছাকাছি গেলেও নির্ধারিত মার্কের(কাট মার্ক) মধ্যে ঢুকতে পারেনি।’
এর আগে দুপুরে ওই শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলি রুবাইতুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন। তখন তিনি তাদের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সিলসহ আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন।
গত সোমবার এমসিকিউ পদ্ধতিতে নেয়া এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার পরপরই তাতে ভুল রয়েছে দাবি করে কয়েক শ’ পরীক্ষার্থী সামাজিক মাধ্যমে লেখেন। ফেসবুকের নিজস্ব ওয়াল এবং কয়েকটি চাকরি সংক্রান্ত গ্রুপে পোস্ট দিয়ে তারা দাবি করেন তারা ৭০-৭৫ নম্বর পাবেন। কিন্তু তারা উত্তীর্ণ হননি। সাধারণত এ ধরনের নম্বর পেলে উত্তীর্ণ হওয়ার কথা। তাই তাদের দাবি প্রকাশিত ফলে ভুল থাকতে পারে।
এর আগে অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার নিয়োগের প্রিলি পরীক্ষার ফলে ভুল ধরা পড়েছিল। পরে তা সংশোধন করে পুনরায় প্রকাশ করা হয়।
এ বছরের ২২ জুন প্রকাশিত প্রথম ফলাফলে আট হাজার ১৯২ জন উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ‘কম্পিউটারের ভুল’ সংশোধন করে ২৮ জুন আবার ফল প্রকাশ করা হয়। নতুন ফলাফলে আরও সাত হাজার ৮১১ জন উত্তীর্ণ হওয়ায় মোট উত্তীর্ণ হন ১৬ হাজার তিনজন।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সদস্য সচিব এর আগে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ন্যাড়া বেল তলায় একবারই যায়। সেই ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি। তাই এবারের ফল বারবার যাচাই করে দেখা হয়েছে।
তিনি জানান, সর্বনিম্ম ৬৩.৭৫ নম্বর(কাট অফ মার্কস)যারা পেয়েছেন তারাই উত্তির্ণ হয়েছেন। তাতে মোট ৮ হাজার ৮শ ৮৭ জন পরীক্ষার্থী উত্তির্ণ হয়েছেন।
ফলাফল প্রস্তুতে কোন ধরনের ভুল হয়নি বলে দাবি করেছেন এই পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ এ মাহবুব উদ্দিন চৌধুরীও।
কৃষি ব্যাংকে ৭০৪ জন কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য প্যানেল প্রস্তুত করতে গত বছরের ১১ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ব্যাংকার সিলেকশন কমিটি। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় গত জুলাইয়ের ২১ তারিখে। পরীক্ষার ঠিক এক মাস পর সোমবার ফল প্রকাশিত হয়; যেখানে উত্তীর্ণ হন ৮ হাজার ৮শ ৮৭ জন চাকরীপ্রার্থী। উত্তীর্ণদের ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর দুইটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তেজগাঁও কলেজ এবং নীলক্ষেত হাইস্কুল কেন্দ্রে।