প্রাণীজ প্রোটিনের মধ্যে ডিম হলো আদর্শ উৎস। প্রোটিন ছাড়াও আরও নানান রকমের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ বলে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ডিম থাকা জরুরী। ডিমের একটি সুস্বাদু অংশ হলো কুসুম। কিন্তু এই কুসুম নিয়ে অনেকের মনে আছে বিভ্রান্তি। কেউ মনে করেন কুসুম খাওয়া ভালো আবার কেউ মনে করেন কুসুম এড়িয়ে চলাই ভালো। আসলে ডিমের কুসুম ভালো নাকি খারাপ? জেনে নিন ডিমের কুসুমের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটি দিকই।
ভালো
ডিমের কুসুম পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। ডিমের কুসুম চোখের জন্য খুবই উপকারী। কুসুমে আছে ‘লুটিন’ ও ‘জিয়ানথিন’ যা চোখকে অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত ডিমের কুসুম খেলে এই উপাদানগুলো বার্ধক্যে চোখের ছানি প্রতিরোধ করে। ডিমের কুসুমে আরও আছে ‘কোলিন’। কোলিন মস্তিষ্ককে কার্যক্ষম রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। কুসুমে উপস্থিত আরেকটি উপকারী উপাদান হলো ‘বেটাইন’, যা রক্তে ‘হোমোসিস্টেইন’য়ের মাত্রা কমিয়ে হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
এছাড়াও ডিমের কুসুমে উচ্চমানের প্রোটিন আছে। আরও আছে ভিটামিন এ, বি৬, বি১২, ডি, ই এবং রিবোফ্লাভিন। পুরো ত্বক, চুল এবং শরীরের বাকি সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য এই উপাদানগুলো খুবই জরুরী। কুসুমে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড আছে যা গর্ভবতী এবং স্তন্য-দানকারী নারীদের জন্য অত্যন্ত জরুরী উপাদান।
মন্দ
সাধারণত রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে ডাক্তাররা ডিমের কুসুম খেতে নিষেধ করেন। আবার ওজন কমানোর জন্যও নিষেধ করা হয় ডিমের কুসুম খাওয়ার ক্ষেত্রে। একজন সুস্থ মানুষের দিনে ৩০০ মিলিগ্রামের বেশি কোলেস্টেরল গ্রহণ উচিত নয়। আর স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি কোলেস্টেরল গ্রহণ করা উচিত নয়। একটি ডিমের কুসুমে ২১৩ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। তাই এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
একজন সুস্থ মানুষের দিনে একটির বেশি কুসুম খাওয়া উচিত নয়। আর এক্ষেত্রে সারাদিনের খাবারের কোলেস্টেরল যেন সর্বোচ্চ মাত্রার ভেতরেই থাকে সেদিকে খেয়াল করে খেতে হবে। সেই সাথে প্রতিদিন ব্যায়াম করে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলার অভ্যাস করে ফেলতে হবে।
যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি কিংবা হৃদরোগ আছে তারা ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলাই ভালো। এক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশ হতে পারে আদর্শ খাবার। একটি মাঝারি আকৃতির ডিমের সাদা অংশে ১০০ ক্যালরি এবং ৫ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী। ফেমিনা।