চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কী অবস্থায় চলছে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকায় আতিয়া মহল নামের সন্দেহভাজন একটি ভবনকে ঘিরে গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন চলছে বোমা ও বিস্ফোরক নিস্ক্রিয়করণের কাজ। এরপর ভবনটিকে পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেবে সেনা বাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়ন।

মঙ্গলবার সকালে আতিয়া মহল এলাকা থেকে কোনো বোমা বা গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মূল অভিযান সমাপ্তের কাছাকাছি এমন ইঙ্গিত দিয়ে জানানো হয়, ভবনটির ভিতরে চারজন জঙ্গির মৃতদেহ, যাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ একজন নারী। এদের মধ্যে দুইজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি দুইটি লাশের গায়ে সুইসাইড ভেস্ট থাকায় সেগুলো সেখানেই পড়ে আছে। তাছাড়া বাড়িটিতে প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক দ্রব্য থাকায় অভিযান অব্যাহত আছে। এরা ছাড়া ভেতরে আর কোন জঙ্গি থাকার সম্ভাবনা নেই বলেও জানানো হয়।

আতিয়া মহলকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে প্যারা-কমান্ডোরা। ছবি- আইএসপিআর

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়: পুরো ভবনে যে পরিমাণ বিস্ফোরক আছে, তা যদি ফেটে যায়, তাতে পুরো ভবন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তাই বেশ সতর্কতার সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া সুন্দর ও সফলভাবে আজকের অভিযান শেষ হয়েছে। দিনব্যাপী অভিযান চালানো হয়েছে।

আতিয়া মহলে প্রবেশ করতে অভিযানে ব্যস্ত প্যারা-কমান্ডোরা। ছবি- আইএসপিআর

সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের উদ্ধার করা দু’টি মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দু’টি মরদেহের মধ্যে একটি নারীর ও একটি পুরুষের। আজ মঙ্গলবার মরদেহ দু’টির ময়নাতদন্ত করা হবে। মরদেহগুলো এখন রাখা হয়েছে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। মোগলাবাজার থানা-পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলের নিচতলাটি কাওসার আলী ও মর্জিনা বেগম নামে দুজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু এ দু’টি মরদেহ তাদেরই কিনা সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না পুলিশ। সেজন্যই মরদেহ দুইটির ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে।

গ্যাস মাস্ক পরিহিত অবস্থায় সাজোয়া যান নিয়ে অভিযান। ছবি- আইএসপিআর

জঙ্গি আস্তানার খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে ঘিরে রাখা হয় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহল নামের এই বাড়িটি। শুক্রবার ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াট সিলেটে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ঘটনাস্থল ঘেরাও করে। এরপর শনিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে। দুপুর নাগাদ ওই বাড়িতে জিম্মি হয়ে থাকা ২৮ পরিবারের ৭৮ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় সেনাবাহিনী। তবে রাতে অভিযানস্থলের বাইরে ৩০০ গজ উত্তরের রাস্তায় দুই দফা বোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত এবং আরও ৪৪ জন আহত হন। এরপর রোববার ও সোমবার অভিযান শেষে চারজন জঙ্গির ‍মৃতদেহ পাওয়ার খবর জানানো হয় এবং আতিয়া মহলের নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী।

আতিয়া মহলকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে প্যারা-কমান্ডোরা। ছবি- আইএসপিআর

‘আতিয়া মহলে’ অভিযানে সেনা কমান্ডোদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অভিযানের পুরোটা সময় জুড়েই পরিস্থিতি প্যারা-কমান্ডোদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। তবে এখনও অভিযান পুরোপুরি শেষ হয়নি। তল্লাশি শেষ হলে ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে পাঠানো হবে।