চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কালো বিড়াল ধরার বিচারে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি

২০১২ সালে বহুল আলোচিত রেলের কালো বিড়াল কেলেঙ্কারির ঘটনায় সেসময়ের মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরো আড়াই বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। আদালত মোহাম্মদপুরে তার সাড়ে ৩২ লাখ টাকা দামের ফ্ল্যাটও বাজেয়াপ্ত করতে বলেছেন। ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল পিলখানা গেটে মাইক্রোবাসে টাকার বস্তাসহ আটক হন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইউসুফ আলী মৃধা, তার নিরাপত্তা কর্মকর্তা রেলওয়ের কমান্ড্যান্ট এনামুল হক ও রেলমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ওমর ফারুক তালুকদার। মাইক্রোবাসটি চালাচ্ছিলেন এপিএস ফারুকের ব্যক্তিগত চালক আজম খান। ঘটনার পর থেকে আজম খান নিখোঁজ। ওই সময়ে রেলের ১৩টি ক্যাটাগরিতে ১ হাজার ৬৯ জন কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়ায় অনিয়মে ঘুষ বাণিজ্যে ওই টাকা লেনদেন হচ্ছিল বলে ধারণা করা হয়। ঘটনার পর থেকে দুই বছর পলাতক থাকার পর ইউসুফ আলী মৃধা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন। ওমর ফারুক অবশ্য ওই টাকাসহ আটকের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত হননি, অবৈধভাবে উপার্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলায় তিনি দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। ঘটনার পর দীর্ঘ ৫ বছর বিষয়টির কোনো সুরাহা না হওয়ায় ধরেই নেওয়া হচ্ছিল যে এই ঘটনাও হয়তো ধামচাপা পড়ে যাবে। সেই অবস্থা থেকে এই মামলার রায় একটি ইতিবাচক দিক। গত ১৮ জানুয়ারি দুদকের বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ জেল-জরিমানা এড়াতে সরকারী চাকরিজীবীদের সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন। এছাড়া দুর্নীতি নির্মূলে নানা পদক্ষেপ শুরু করার ঘোষণাও দিয়েছেন। দুদক চেয়ারম্যানের ওইসব পদক্ষেপের কার্যকারিতা সর্ম্পকে সন্দিহান ছিল দেশের জনগণ ও গণমাধ্যম। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনেকের জন্য দায়মুক্তির কমিশনে পরিণত হয়েছে, অনেকে এমন অভিযোগও করে আসছিলেন দুদকের বিরুদ্ধে। আলোচিত ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী সাবেক এপিএসের সাজা হওয়াতে দুদকের ভাবমূর্তি উন্নত হয়েছে এবং তা আইনের শাসনের এক নিদর্শন হয়ে থাকলো। দেশের বাস্তব প্রেক্ষাপটে রাতারাতি দুর্নীতি নির্মূল সম্ভব না হলেও আইন-আদালতের মাধ্যমে দুদক যদি এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারে, তাহলে হয়তো দুর্নীতি নামের বিষফোঁড়া ছোট হয়ে আসতে থাকবে।