চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কথিত ‘ভুল চিকিৎসা’কে কেন্দ্র করে কোন পক্ষ থেকেই দায়িত্বহীনতা কাম্য নয়

রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আফিয়া জাহিন চৈতীর মৃত্যু হলে ‘ভুল চিকিৎসার’ অভিযোগে ওইদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর আন্দোলন, পাল্টা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সর্বশেষ এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমজাদ আলীর দায়ের করা মামলায় হাসপাতালের পরিচালক ডা. এম এ কাশেমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহসহ আট চিকিৎসককে জামিন দেন আদালত। এর জেরে বেসরকারিভাবে রোগী দেখা বন্ধ রাখার মতো ঘটনা ঘটেছে। অবশ্য এর আগেও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন ডাক্তার ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনায় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এরকম কর্মবিরতির ঘটনা আমরা দেখেছি। আমরা মনে করি, হাসপাতালে অকালমৃত্যুর শোক মেনে নেয়া খুবই দুরূহ এবং তা কখনোই কারো কাম্য হতে পারে না। পাশাপাশি রোগীর মৃত্যুর জন্য ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে ডাক্তার লাঞ্ছনা বা হাসপাতাল ভাংচুরের মতো পরিস্থিতিও মোটেই কাম্য নয়। হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসায় ভুল বা অবহেলার অভিযোগ থাকলে দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) বরাবর অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। কেননা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আনীত যেকোন অভিযোগের তদন্ত করার দায়িত্ব ও পূর্ণক্ষমতা এই প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে। একইসঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোন ডাক্তারের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ এলে তদন্ত ছাড়াই তার পক্ষ নিয়ে ধর্মঘট ও আন্দোলনের নামে স্বাস্থ্যখাতকে জিম্মি করে ফেলাও গ্রহণযোগ্য সমাধান নয়। এক্ষেত্রে আমরা উভয়পক্ষের কাছেই সহনশীলতা আশা করি। আমরা মনে করি, কোন ধরনের ক্ষোভ কিংবা আন্দোলন-পাল্টা আন্দোলন নয়, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে চিকিৎসক এবং রোগীর সুসম্পর্কের চিকিৎসা ব্যবস্থা অব্যাহত থাকলে তা সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে সফল হবে। তাই সব পক্ষকে সংযত হয়ে দেশের স্বাস্থ্য খাতের উত্তরোত্তর সাফল্যের জন্য একযোগে কাজ করে যাওয়ার জন্য আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাই।