নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির একমাত্র ছেলে মাহীর সরওয়ার মেঘ চাপা কান্না নিয়ে বেড়ে উঠছে মামা-নানীর ছায়ায়। বাবা-মাকে নিয়ে তার স্মৃতি অটুঁট থাকলেও তার প্রকাশ একদমই কম, তবে কোনো শিশুকে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখলে কিছুটা বিচলিত হয়ে ওঠে মেঘ। চ্যানেল আই অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন নিহত মেহেরুন রুনির ছোটভাই নওশের আলম রোমান।
রোমান বলেন, মেঘ খুবই লক্ষী একটা ছেলে। সে তার বাবার মতো চুপচাপ, কিন্তু খুবই বুদ্ধিমান। পরিবারের ভালমন্দ থেকে শুরু করে বাস্তব পরিস্থিতি খুব ভাল বুঝতে পারে। তার বয়সী অনেক বাচ্চা যেমন ঝামেলা তৈরি করে, মেঘ তা মোটেও করে না। কম্পিউটার-মোবাইল আর তার পড়াশোনা নিয়ে অন্য সাধারণ বাচ্চাদের মতো সে বেড়ে উঠছে।
‘আমরা চেষ্টা করছি সম্ভব সবকিছু করতে।’
রাজধানীর একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে মেঘ। ক্রিকেট খেলতে ভালবাসে, ক্রিকেটে বোলিং তার পছন্দ। বাংলাদেশের খেলা প্রায় মিস করে না সে। খুব ছোট থাকতে ছবি আঁকার অভ্যাস থাকলেও মেঘ এখন খুব একটা ছবি আঁকে না।
মেঘের পড়াশোনা থেকে শুরু করে রাতের ঘুম পর্যন্ত প্রায় সবকাজের সঙ্গী মামা রোমান। নানী নুরুন্নাহার মির্জা একবুক কষ্ট নিয়ে অসুস্থতার মধ্যে মেঘের সঙ্গেই কাটাচ্ছেন দিনের বেশীরভাগ সময়। মেঘের পছন্দ-অপছন্দের খাওয়া-দাওয়া আর দৈনন্দিন কাজে নানী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।কিছুটা দূরে থাকা মেঘের দাদী ও সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মুনিরও মেঘের মুখের দিকে তাকিয়ে ছেলে হারানোর কষ্ট ভুলতে চাইছেন।
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সময় এই দম্পতির একমাত্র সন্তান মেঘের বয়স ছিল সাড়ে চার বছর। এখন দশের কাছাকাছি মেঘ মানসিকভাবে অনেকটাই সামলে নিয়েছে নিজেকে।
বাবা-মায়ের না থাকার বিষয়ে মেঘের উপলব্ধি সর্ম্পকে রোমান বলেন, মেঘ মাঝে মাঝে তাদের পুরাতন ছবির অ্যালবাম ও কম্পিউটারে রাখা ছবি দেখে। কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে বাবা-মায়ের সাথে কোনো বাচ্চার উপস্থিতি দেখলে, সে (মেঘ) কিছুটা বিচলিত হয়, সেসময় আমাকে তার পাশে চায়।নানীর হঠাৎ অসুস্থতার সময় মামা রোমানসহ আত্নীয়স্বজনদের মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেয়াসহ মেঘের নানা বুদ্ধিমত্তার ঘটনা জানালেন নওশের আলম রোমান। বাবা-মায়ের মৃত্যু বার্ষিকীতে কবর জিয়ারত ছাড়া সাগর-রুনি বিষয়ক অন্য আয়োজন থেকে তাকে যৌক্তিক কারণেই দূরে রাখা হয়।