চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এ কোন মতাদর্শ যেখানে আত্মঘাতী হওয়ার নামে বাবা-মা সন্তানের হন্তারক!

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গি আস্তানায় পরিচালিত ‘অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিন’ আত্মঘাতী জঙ্গি কামাল উদ্দিন ও তার স্ত্রী জোবায়রা এবং তাদের শিশু সন্তানের লাশ গ্রহণ করতে পরিবার অস্বীকৃতি জানানোর ফলে বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়েছে। সোমবার নিহত জঙ্গি কামাল উদ্দিনের বাবা মুজাফফর আহমেদ এবং জোবায়রার বাবা নুরুল আলম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মর্গে এসে লাশ না নেয়ার কথা জানান। নিহত দুই জঙ্গির বাবা মুজাফফর আহমেদ ও নুরুল আলম বলেন: আমরা বুঝতে পারিনি ছেলে-মেয়ে এরকম (জঙ্গি) হচ্ছে। ওরা যে ঘৃণ্য কাজ করেছে তার কোন ক্ষমা নেই। তাদের কারণে সমাজে হেয় হচ্ছি আমরাও। তাই ওদের মরদেহ আমরা নেব না।’ এর আগে হলি আর্টিজানে নিহত জঙ্গিসহ আরো কয়েকটি আস্তানায় নিহত জঙ্গিদের বেলায় একই ধরণের ঘটনা দেখো গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, পারিবারিক কিংবা সামাজিকভাবে জঙ্গিরা ঘৃণার পাত্র হিসেবেই বিবেচিত। এই জঙ্গিদের কারণে তাদের মা-বাবা ও পরিবার সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছে। এ কারণে তারা মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত। কিন্তু এরপরও তাদেরকে জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফেরানো যাচ্ছে না। এমনকি এসব জঙ্গি ক্রমাগতভাবে নিজেদের স্ত্রী এবং শিশু সন্তানসহ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে! সীতাকুণ্ডের ঘটনার আগেও কয়েকটি জঙ্গি আস্তানায় নারী ও শিশুদেরকে ব্যবহৃত হতে দেখা গেছে। পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করার পূর্বেই পিতা-মাতা কর্তৃক নিষ্পাপ শিশুদের জঙ্গিবাদের বলি হওয়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। তাই জঙ্গিবাদ রোধে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সামাজিক ঘৃণার বিষয়টি আরো ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী কর্তৃক তাদের ব্রেইনওয়াশের বিষয়টি নিয়ে তরুণ সমাজের মধ্যে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি। কঠোর হাতে জঙ্গি দমনের পাশাপাশি ধর্মের অপব্যাখ্যা করে যেন সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবন থেকে জঙ্গিবাদের এই অন্ধকারের দিকে তাদেরকে কেউ নিয়ে যেতে না পারে, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করা জরুরি।