চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এখনও হুমায়ূন আহমেদের ছায়া খোঁজেন রিয়াজ

ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপারস্টার রিয়াজ তার ক্যারিয়ারের খুব অল্প সময়ে কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্নেহধন্য হয়েছিলেন। তার বহু নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল নায়ক রিয়াজ। হুমায়ূন আহমেদের গল্প অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা ‘দুই দুয়ারী’র জন্য রিয়াজ পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

প্রিয় লেখকের সঙ্গে প্রথম কাজ করেই পুরস্কার পাওয়াটা ছিলো রিয়াজের জন্য অনেক আনন্দের ও গৌরবের। হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে তার সঙ্গে কেটে যাওয়া স্মৃতিগুলো নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন রিয়াজ।

হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে প্রথম দেখা
হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা ‘দুই দুয়ারী’ সিনেমার কথা নিয়ে। স্যার আমাকে তার কাছে ডাকলেন, আমি গেলাম। স্যার কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন, এরপর বললেন ‘ঠিক আছে’। আমি ভয়ে ভয়ে স্যারকে জিজ্ঞেস করলাম, স্যার কী ঠিক আছে? স্যার বললেন, তুমি আমার ‘দুই দুয়ারী’ সিনেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবে। কথাটি শুনে আমি কিছুক্ষণ চুপ ছিলাম।

হুমায়ূন আহমেদ সঙ্গে প্রথম শুটিং
‘দুই দুয়ারী’ সিনেমায় স্যারের সঙ্গে আমার প্রথম শুটিং। তবে আমার কারণে প্রথম শুটিংটি স্যার দিনের জায়গায় রাতে করতে হয়েছিলো। যেদিন আমাকে প্রথম শুটিং’র জন্য তিনি ডাকলেন, সেদিন আমার আরেকটি সিনেমার শুটিং ছিলো তাই আসতে পারছিলাম না। স্যারকে ফোন দিলাম বললাম, শিডিউলের কারণে আজ শুটিং’এ আসতে পারছি না।%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%9cস্যার শুনে বললো, তুমি রাতে করতে পারবা। শুনে মনে মনে খুব খারাপ লাগলো  আমার কারণে তাকে কষ্ট দিবো আবার ভাবলাম স্যারে মুখের ওপর কথা বলা উচিত হবে না। তাই আমি বললাম, স্যার আপনি যদি পারেন তাহলে আমিও পারবো। কিন্তু সেদিন আমার শুটিং করার কোনো ইচ্ছে ছিলো না। স্যারকে শুধু না বলতে পারবো না বলে রাতে আমি নুহাশ পল্লী চলে গেলাম। কিন্তু নূহাশ পল্লী পৌঁছে সব উল্টে গেলো, সারারাত স্যারের সঙ্গে শুটিং করলাম।

হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে মজার স্মৃতি
হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে হাজারো মজার স্মৃতি রয়েছে আমার জীবনে। আসলে কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবো? এই মুহূর্তে কোনোটাই মনে পড়ছে না। তবে বলতে পারি স্যারের সঙ্গে যতক্ষণ সময় কাটাতাম, ততক্ষণ অনেক মজা হতো। অনেক সময় শুটিং বাদ দিয়ে আমাদের গান শোনাতেন, মজার মজার গল্প বলতেন।%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%a7

হুমায়ূন আহমেদের কাছে বকা খাওয়া
কাজ পারফেক্ট না হলে স্যার বকা দিতেন। বকাগুলো প্রায় সবসময়ই হতো খুব মিষ্টি। স্যারের বেশিরভাগ বকার ভাষা ছিলো, ‘ভালো হয়নি আবার ভালো করে করো’। হুমায়ূন আহমেদ খুব অভিমানী ছিলেন। পুরো বচ্চাদের মতো অভিমান করতেন। রাগ ও অভিমান নিয়ে তিনি খুব মজার মানুষ ছিলেন।

হুমায়ূন আহমেদ নেই, তবুও তার গল্পে কাজ করার অনুভূতি
হুমায়ূন স্যারের মৃত্যুর পরে এখনও তার গল্প-উপন্যাসে কাজ করি। যখন তার গল্পে কাজ করি, এক ধরনের শূন্যতা ও হাহাকার কাজ করে আমার মধ্যে। শুটিং ইউনিটে কোনো প্রাণ খুঁজে পাই না। সব সময় তার ছায়া খোঁজার চেষ্টা করি। স্যারকে অনুভব করি।