‘ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা করতে খুব ভাল লাগত। যা পেতাম চোখের সামনে সেটাই পড়ে ফেলতাম।এভাবে পড়তে পড়তে কত রাত যে ভোর হয়ে গেছে তার ইয়ত্তা নেই।’
জ্ঞানপিপাসু এই তরুণের নাম তৌহিদ এলাহী। ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তিনি।৩০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে যোগ দেন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে। চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন জীবনে উঠে আসার গল্প।
জামালপুরের জোরখালী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩.৭৫ জিপিএ নিয়ে এসএসসি পাশ করেন। ফলাফল আশানুরুপ না হওয়ায় কিছুটা আশাহত হয়েছিলেন।তবে এটাকেই জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন তৌহিদ। ২০০৪ সালে ৪.৭০ জিপিএ নিয়ে এইচএসসি পাশ করেন।তীব্র প্রতিযোগিতায় সফল হয়ে ভর্তি হন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে হলের সিনিয়র ভাই ও বন্ধুদের দেখে উৎসাহিত হন বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়ে। ছোট থেকেই অংক ও ইংরেজির ভিতটা মজবুত থাকায় খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি বিসিএস পরীক্ষার ধাপ পেরোতে।
পরবর্তীতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে অংশ নেন পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টারে। সেখানকার নিয়মতান্ত্রিক জীবন এখনও হাতছানি দেয় তাকে। ভোর ৫ টায় সাদা পোশাকে প্যারেড, সারাদিন ক্লাস করে বিকেলে সহকর্মীদের সঙ্গে খেলা, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় শেখাটাকে জীবনে পাথেয় বলে উল্লেখ করেন এই তরুণ।
কাদামাটি, খানাখন্দ, ডোবা-খাল, সাপ-পোকার মধ্যে নদীর তীরে তীরে স্বল্প কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ মাইলের পর মাইল হেটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের জীবনে অন্যতম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
‘প্রথম প্রথম খুব ভয় লাগত। জেলেরা মানতে চাইতনা। অনেককে জেল জরিমানা করতে হত। উপকূলীয় এলাকায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্ম কর্তাদের ও জেলা প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তাদের এসময় রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটাতে দেখেছি।’
২০১৫ সালে ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে এমবিএ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে।কর্মস্থল রাজধানী ঢাকা হওয়াতে এখানে কাজের সুযোগ অনেক বেশি বলে উল্লেখ করেন তিনি।বন্ধুমহলে জনপ্রিয় হাসিখুশি এই তরুণ কাজ করতে খুব ভালবাসেন।