চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

এএসপি হত্যা: ‘তদন্তের স্বার্থে’ কিছু বলছে না পুলিশ

তদন্তের স্বার্থে এখন কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না জানিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তরা বলছেন, হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিজানুর রহমান হত্যাকাণ্ডের রহস্য তদন্ত শেষ হলেই জানা যাবে।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের বিরুলিয়া ব্রিজ এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার নিহতের ময়নাতদন্ত করার পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জানিয়েছেন, মিজানুরের সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চামড়ার নিচে রক্ত জমাট অবস্থায় ছিল। এছাড়াও তার গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, এএসপি মিজানুরের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে এখনই কিছু্ বলা যাবে না। ব্যাপারটা তদন্তাধীন রয়েছে, সব কিছুর উত্তর জানা যাবে তদন্তের পর।

ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে মিজানুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সিআইডিসহ বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা কাজ করছে। তাই তদন্তের স্বার্থে এখনই কোনো কথা বলা যাবে না।

প্রায় দেড় বছর আগে ২০১৫ সালের ৫ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ায় সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে পুলিশ কর্মকর্তা মুকুল হোসেনকে। সেই ঘটনার সময় সন্ত্রাসীদের হামলার মুখে সশস্ত্র পুলিশ কেন প্রতিরোধ গড়তে ব্যর্থ হয়।

সেই বিষয়টি  জানতে চাইলে সহেলী ফেরদৌস বলেন, আসলে পাবলিক সেফটির কথা চিন্তা করেই তারা অস্ত্র ব্যবহার করে না। জনবহুল এলাকায় পুলিশ যদি অস্ত্র ব্যবহার করে তবে জনগণ ক্ষতি হতে পারে। তাই সশস্ত্র থাকলেও নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ ডিউটি পালন করে।

পুলিশের আবাসন সমস্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা সরকারি চাকরি করলেও আমাদের আবাসন ব্যবস্থা ভিন্ন ভিন্ন এলাকায়। এরফলে আমারা নিজেদের কর্মকর্তাদেরও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারছি না।

এ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩০ জুলাই দিন ধার্য করে দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাজহারুল হক এ দিন ধার্য করেন।

ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার আনিসুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, এ মামলার এজাহার ও এফআইআর কপি আদালতে এলে বিচারক তা গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মাসুম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারকে নিঃসন্দেহে হত্যা করা হয়েছে। তবে কে বা কারা, কেন হত্যা করেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে ঈদ মার্কেট পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, মিজান রাতে সেহরি খেয়ে সকালে একা বাসা থেকে বের হন। এরপর সম্ভবত তাকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এটা নিশ্চিত বলা যায়, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। তার গলায় দাগ দেখা গেছে। তবে কে বা কারা এবং কেন হত্যা করেছে তা তদন্ত শেষে বলা সম্ভব হবে।

এর আগে সকালে মিজানুর রহমানের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ড. প্রদীপ কুমার বিশ্বাস চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, নিহত মিজানের সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চামড়ার নিচে রক্ত জমাট অবস্থায় ছিলো। এছাড়া তার গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। লাশের ভিসেরা সংরক্ষণ করা হয়েছে, রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানানো হবে।

পুলিশ জানায় এএসপি মিজান বুধবার সেহরির সময় থেকে নিখোঁজ ছিলেন। সকাল ১০টার পর রূপনগর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বিরুলিয়া ব্রিজের কাছে রাস্তার পাশে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে স্থানীয়রা খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। তার গলায় আঘাতের চিহ্নের পাাশাপাশি মুখে গার্মেন্টসের ঝুট ঢোকানো ছিল।

রূপনগর থানার ওসি শহীদুল আলম তখন চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি আমরা।