কক্সবাজারের উখিয়ায় বন্যহাতির আক্রমণে ঘুমন্ত মা-সন্তান সহ একই পরিবারের ৪ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে দুই জন। হাতির আক্রমণের শিকার রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিল।
উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত ) মো. কায় কিসলু জানান, শনিবার ভোর রাতের দিকে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী ১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ-ব্লক এর ৫১ নং পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- আবু ছিদ্দিকের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন (৩৫), তার মেয়ে রুবিনা (১১), সাবুকুন্নাহার (৯) ও ছেলে মোহাম্মদ হাসিম (৫)। আহতরা হলো- তাসলিমার স্বামী আবু ছিদ্দিক (৪৫) ও ছেলে স্বপন (২)।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে সহিংসতার পর উখিয়ায় পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা। তারা পাহাড়ী এলাকায় গাছ-পালা কেটে অসংখ্য বসতি গড়ে তুলেছে। এতে বন্যহাতির বাসস্থান ও খাবার সংকটে পড়ায় হামলে পড়ছে লোকালয়ে।
তিনি আরও বলেন, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাহাড়ী এলাকায় পলিথিন টাঙ্গিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বসবাস করে আসছে মিয়ামারের মংড় থেকে আসা আবু ছিদ্দিক । শনিবার ভোর রাতে তাদের সে পলিথিন দেয়া ঝুপড়ির উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে বন্য হাতির দল। তারা সবাই ঘুমে ছিল। সেসময় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে দুই জন ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে দুপুর দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২ জন মারা যায়। পরে আহত আবু ছিদ্দিক শিশু স্বপনকে চকরিয়ার ডুলাহাজারা মালুমঘাট খ্রিস্টান হাসপাতালে নেয়া হয়।
নিহতদের মৃতদেহ ক্যাম্পে রাখা হয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে দাফনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান উখিয়া থানার ওসি তদন্ত কায় কিসলু।
এছাড়া এক সপ্তাহ আগেও উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকার মধুরছড়ায় বন্যহাতির আক্রমণে বাবা-মেয়ে নিহত হয়েছিল।
এ নিয়ে গত ১০ দিনে বন্যহাতির আক্রমণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ জনের মৃত্যু হলো।