শান্তি, আনন্দ আর মুসলিম জাহানের ঐক্যের বার্তা নিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় আমাদের জীবনে আবার এসেছে পবিত্র ঈদ উল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পরে ঈদ উল ফিতর একই সঙ্গে উৎসব ও ইবাদতের আধ্যাত্মিক স্বাদ দিয়ে যায় প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমের মনে। ধর্মীয় মূল্যবোধে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খলিত করে ও মানবিকতা জাগ্রত করে। ঈদ শুধু নিছক আনন্দ আর ফূর্তির নয়; এ থেকে আমাদের জীবনের জন্য শিক্ষণীয় আছে অনেক কিছুই। আমাদের উপলব্ধিতে ধরে রাখতে হবে যে ঈদ হচ্ছে কল্যাণমুখী আনন্দ। কলুষতামুক্ত পবিত্র আনন্দ, ত্যাগের আনন্দ। উপহার সামগ্রীর আদান প্রদানের মাধ্যমে একে অন্যের মধ্যে আন্তরিকতা যেমন বাড়ে, তেমনি ফিতরা ও যাকাতের মাধ্যমে সমাজে ধনী ও গরীবের মধ্যে ব্যবধান কিছুটা কমে। শাওয়ালের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিটি মুসলিমের ঘরে আনন্দের ঢল নামে। নবী করিম (সা.) ঈদকে মুসলিম জাহানের জন্য আনন্দের বলে উল্লেখ করে গেছেন। সেই আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে সবার মাঝে। গেলো কয়েকবছর ধরে ঈদের আনন্দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছুটা আতঙ্ক আর জঙ্গিবাদের হুমকি। সতর্কতা হিসেবে এবার প্রতিটি ঈদগাহ, মসজিদ ও বিনোদন কেন্দ্রে থাকছে নিরাপত্তার কড়াকড়ি। প্রায় অর্ধকোটি লোক ঢাকা ত্যাগ করে ঈদের আনন্দ স্বজনদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে গ্রামে গেছেন। ঈদযাত্রায় পথে থাকা জনগণ ও রাজধানীতে থাকা মানুষদের নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সরকারি বিশেষ ব্যবস্থা আর সচেতনতায় এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে যানজট বেশ কম। তবে অনাকাঙ্খিত কিছু সড়ক দুর্ঘটনা ঈদের আগে আমাদের আনন্দে বিষাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। তেমনি পার্বত্য অঞ্চলে ঈদ এসেছে শোকের মধ্যে, হাওরে বন্যায় ফসলহানির পর। এ ঈদ ওইসব এলাকার মানুষের দু:খ-কষ্ট কিছুটা হলেও কমাবে বলে আমরা আশা করি। শান্তি ও আনন্দের এই ঈদ শক্তি ও সাহস যোগাক সেটাও আমাদের চাওয়া। সবাইকে ঈদ মোবারক।