দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর ঈদ অনুষ্ঠানে যখন গ্রামীণ কৃষক অবহেলিত তখন ঈদ অনুষ্ঠানে উজ্জল ব্যতিক্রম ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের পরদিন কৃষকের কাছে জনপ্রিয় এই অনুষ্ঠানটি চ্যানেল আই’য়ে সম্প্রচার হয়েছে। বছরের পর বছর পেরিয়ে এখনও দর্শকের কাছে ঈদে সবচেয়ে জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠান। মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার দক্ষিণ হলদিয়ায় পদ্মার পাড়ে এবারের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা কৃষকদের আনন্দ অনুভূতি ভাগাভাগি করতে দেখা গেছে। গ্রামীণ পরিবেশে দু’জন প্রতিদ্বন্দ্বীর বালিশ লড়াই থেকে শুরু করে পেটে দড়ি বেঁধে চারজন পুরুষের চতুর্মুখী টান, মোড়গ লড়াই বা বস্তা দৌড়ে শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণ এমনকি বৌ সাজানোতে কৃষাণীদের অংশগ্রহণে হাসি আনন্দের পাশাপাশি তাদের জীবনের বিভিন্ন দিক উঠে এসেছে। আর কৃষকদের এই অনুষ্ঠান যে শুধু কৃষককে আনন্দিত করেছে তা নয়, বরং গ্রাম-বাংলার চিরায়ত রূপ শহরের দর্শকদেরও আরেকবার শেকড়ের কাছে নিয়ে গেছে। তাই দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে সারাবছর কষ্টে থাকা এবং প্রচার-প্রচারণার বাইরে থাকা গ্রামীণ কৃষককে আনন্দের উপলক্ষ করে দেয়া এবং সেই আনন্দের বিষয়টি সারা দেশসহ পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’ অনুষ্ঠানের পরিকল্পক, পরিচালক ও উপস্থাপক শাইখ সিরাজকে আমরা অভিনন্দন জানাই। কৃষি নির্ভর আমাদের এই দেশ বিনির্মাণে যারা সারা বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান তারা সবসময়ই অবহেলিত থাকেন। তাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার বিষয়গুলোও থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। এক্ষেত্রে ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’ বিষয়গুলো প্রতিবছর সমাজের সামনে নিয়ে আসে। ঈদের অন্য অনুষ্ঠানগুলো শুধু শহরকেন্দ্রিক বিভিন্ন উপাদানে ভরপুর থাকে। কিন্তু নিজের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির শেকড়কে ভুলে কখনোই কোন জাতির উন্নতির নজির কিংবা সুযোগ নেই বলেই আমরা বিশ্বাস করি। তাই কৃষককে নিয়ে এরকম আরও অনেক অনুষ্ঠান আমরা প্রত্যাশা করি।