রাঙামাটি থেকে: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আশ্রয়কেন্দ্রে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালি আর পাহাড়িদের আবাসন আলাদা হলেও ঈদ উপলক্ষে প্রশাসন ও বেসরকারি সংস্থার বিশেষ ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হয়নি কেউ। ঈদ উপলক্ষে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মুসলমানদের জন্য ত্রাণ হিসেবে এসেছে শাড়ি,পাঞ্জাবি। দুর্যোগে একই ছাদের নিচে মাথাগোঁজা পাহাড়িরা মলিন পোশাকের বদলে পেয়েছে পিনন, লুঙ্গি-গেঞ্জি।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের ভবনে পাশাপাশি থাকা পাহাড়ি-বাঙালি পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলা যাবে কি না জিজ্ঞেস করলে সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত ল্যান্স কর্পোরাল হায়দারুল হাসিমুখে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেলেন। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠার সময় দেখা গেল সিঁড়িঘরে একটি খালি বেডিংয়ের উপর দুটি ছাপা শাড়ি।
ওপর তলায় একটি কক্ষে আছে পারভীন আক্তার আর নাসরিন আক্তারদের পরিবার। তাদের পাশেই একটি কক্ষে আছে হনুফাদের পরিবার। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, পাহাড় ধসে স্বজন হারানো আর নিজেরাও আহত হওয়া এই মানুষদের ঈদ বলতে এবার কিছু নেই। প্রশাসন থেকে বিতরণ করা শাড়ি, লুঙ্গিতেই যা একটু ঈদের আমেজ।
হনুফাদের পাশের কক্ষেই একটি চাকমা পরিবার। এই পরিবারকেও মুসলিমদের নতুন জামার আনন্দ ছুঁয়ে গেছে।
বিছানায় আধশোয়া অমর বালা চাকমা একটু আগেই ছেলেকে ঘুম পাড়িয়েছেন। খাবার আর কাপড়ের বন্দোবস্ত হওয়ায় আপাতত দুশ্চিন্তামুক্ত দেখাচ্ছিলো তাকে।
অমর বালা চাকমা বলেন, ‘এবার পাহাড়ে এরকম বিপদে সবাই আমরা এক জায়গায় আছি। কাল মুসলিমদের ঈদ উপলক্ষে শাড়ি আর নতুন জামা পেয়েছে। আমরাও পেয়েছি পিনন, ছেলেরা লুঙ্গি, গেঞ্জি। ঈদের দিন এগুলো পরবো।’
জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা এই আশ্রয়কেন্দ্রে আছে ৮৫ টি পরিবার। এর মধ্যে ১২ টি চাকমা পরিবার।
সেনাবাহিনীর ল্যান্স কর্পোরাল হায়দারুল বলেন, ‘ঈদে বাঙালি, চাকমা সবার জন্যই পোশাক এবং ভালো খাবার দিচ্ছি আমরা।’
ছবি: নাসিমুল শুভ