চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ইসি’র সঙ্গে সংলাপের আগে আওয়ামী লীগের সামনে যতো ইস্যু

২০১৮ নির্বাচনের বছর। সংবিধান অনুযায়ী ২০১৮’র শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে সংলাপে বসতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় আসছে মাসে; ১৮ (অক্টোবর) তারিখ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসবে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সংলাপকে সামনে রেখে এরই মধ্যে প্রস্তাবনা তৈরীর কাজ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। তবে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশন শেষে দলটির সভাপতি (শেখ হাসিনা) ফেরার পরই সব কিছু চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

এর আগে মনিটরিং করা হবে অন্য দল গুলোর প্রস্তাবনাও। আওয়ামী লীগের জন্য নির্ধারিত দিনের ঠিক তিন দিন আগে (১৫ অক্টোবর) ইসির সঙ্গে বসার কথা রয়েছে বিএনপির। তাই আগে ভাগে কিছু না বললেও বেশ কিছু ইস্যুতে অনড় থাকার আভাস দলটির নেতাদের কথায়।

এক্ষেত্রে ১৪ দলীয় ঐক্য জোটের অন্য দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে চাইছে আওয়ামী লীগ। চিন্তায় রয়েছে অভিন্ন প্রস্তাবনারও। ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগেই ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ঈদের আগেই বসার কথা ছিলো। কিন্তু, বন্যা-রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সেটা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আশা করা হচ্ছে; জাতিসংঘের অধিবেশন শেষে দেশে ফিরলেই সকলের সঙ্গে বসবেন তিনি।’

১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ইসির কাছে অভিন্ন প্রস্তাব রাখার বিষয়টিও জানান তিনি। অবশ্য, ১৪ দলে আওয়ামী লীগসহ ৬ টি দলের নিবন্ধন রয়েছে; বাকি দলগুলোর নিবন্ধন নেই।

দলটির একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়: সংবিধান অনুযায়ী প্রস্তাবনা তৈরী করছে আওয়ামী লীগ। যার মধ্যে থাকছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান রাখাসহ বেশ কিছু বিষয়। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের যে দাবি কথা বিএনপি বলে আসছে তা কোনো ভাবেই মেনে নেবে না আওয়ামী লীগ।

তবে প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র রুটিন ওয়ার্ক করবেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নির্বাহী সকল ক্ষমতা চলে যাবে নির্বাচন কমিশনের হাতে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ড. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন: সংবিধান অনুয়ায়ী আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করি।  বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।  এরপাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনকে কিভাবে আরও শক্তিশালী করা যায় সে ব্যাপারে আমরা আমাদের প্রস্তাবনা গুলো নির্বাচন কমিশনের সামনে তুলে ধরবো।

তবে গণফোরামসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল সেনাবাহিনীকে নির্বাচনকালীন ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার যে প্রস্তাব দিয়েছে তার সঙ্গে একমত নয় আওয়ামী লীগ।  এ প্রসঙ্গে আব্দুর রাজ্জাক বলেন: সেনাবাহিনী নির্বাচনকালীন ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নয় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে এমন প্রস্তাব রাখবে আওয়ামী লীগ।

তবে দলের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের অনেকেই বলেছে: তারা মনে করেন, ই-ভোটিং ব্যবস্থা চালুর মতো যথেষ্ট সক্ষমতা এখনও নির্বাচন কমিশনের নেই। এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য না করলেও; কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠক শেষে ইভিএমের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ তার অবস্থান পরিস্কার করবে।

ইসিতে আওয়ামী লীগ কি ধরণের প্রস্তাবনা রাখাবে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এবং প্রেসিডিয়াম মেম্বার কাজী জাফর উল্যাহ’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দুজনই বলেন: এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নেত্রী দেশে ফিরলে; সংলাকে কারা কারা যাবে এবং কি কি বিষয়ে আলোচনা করা হবে তা চূড়ান্ত করা হবে।

এছাড়া, আওয়ামী লীগের প্রস্তাবনায় ওঠে আসতে পারে: অভিন্ন পোস্টার, নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীদের জনসভার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে, জামানতের পরিমাণ ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করাসহ প্রার্থীদের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে সরবরাহকৃত একটি নির্দিষ্ট টোকেন মানির মতো বিষয় গুলো।

গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের সঙ্গে বসার মধ্যদিয়ে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এরপর, ১৬ ও ১৭ আগস্ট নির্বাচন কমিশন আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানায় গণমাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের। সবশেষ ২৪ আগস্ট রাজনৈতিক দল গুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।