চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ইউরোপ এবং মুসলিমদের সম্পর্ক কত পুরনো?

ক্ষমতার রেষারেষি আর শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্র হয়ে ওঠা মধ্যপ্রাচ্যে বোমা বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ঘরহারা মানুষের ঢল নেমেছে ইউরোপে। অথচ আজ সেখানে বেশিরভাগ মানুষের কাছে এরা উড়ে আসা উপদ্রব। এই ঘৃণাভরা অবিশ্বাসের ফাঁটল বড় করেছে ইউরোপে চালানো একের পর এক জঙ্গি হামলা। তাই এখন সেখানে মুসলিম বিদ্বেষ চরমে। তবে ইউরোপের ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা।

সাম্প্রতিক জেনোফোবিয়া বিশেষ করে ইসলামোফোবিয়ার অসহিষ্ণু ইউরোপে কয়েকজন শিল্পী দেখিয়েছেন ইসলাম ও ইউরোপের সম্পর্ক নতুন নয়। শতাব্দীর পর শতাব্দী ইউরোপের সংস্কৃতিতে নতুন সংযোজন ঘটিয়েছে ইসলাম। এই সংযোজন যেমন ইউরোপকে সমৃদ্ধ করেছে ইসলাম তেমনি ইসলাম পেয়েছে আধুনিকতা ও অপেক্ষাকৃত বেশি উদারতা।

ইউরোপের সঙ্গে ইসলামের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ ইতিহাস-সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে ‘ইসলাম, ইটস অলসো আওয়ার হিস্ট্রি’ নামের প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনীতে মার্বেল পাথরে ধর্মগ্রন্থের ভাস্কর্য উপস্থাপনের মাধ্যমে ইহুদি,খ্রিস্টান ও মুসলিমদের মধ্যে সেতুবন্ধন দেখাতে চেয়েছে ভাস্কর নাজি কামুশে।


ইউরোপের খাবার সংস্কৃতিতে মুসলিম অবদানের সুপ্রাচীন ইতিহাসে প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন রূপে দেখানোর জন্য প্রদর্শনীতে রয়েছে প্রাণবন্ত একটি ভিডিও গেম। এখানে গেম খেলে জানা যাবে ইউরোপের কোন খাবারের প্রচলন ঘটিয়েছে মুসলিমরা।


ইউরোপকে শক্তিশালী করতে মুসলিম অধ্যূষিত উপনিবেশগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চমৎকারভাবে। প্রদর্শিত হচ্ছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পোস্টার,প্রপাগান্ডা যেখানে সব ভুলে প্রাধান্য পাচ্ছে ঐক্য।

এখন যাদের সামান্য জায়গা দিতে নারাজি গোটা ইউরোপ একসময় সেই মানুষগুলোর চাষ করা নানা সম্ভারের আশায় দিনগুণতো ইউরোপ। কমলা, খেজুরের মতো বহু পণ্য আসতো আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো থেকে।

এছাড়াও সমরবিদ্যা, প্রকৌশল, পোশাকেও ইউরোপকে বৈচিত্র এনে দেয়া ইসলাম, ইসলামিক পোশাকে-স্থাপত্যে ইউরোপের অবদান প্রদর্শিত হচ্ছে।

নতুন বার্তা দেয়া এই প্রদর্শনীর ব্যবস্থাপক ফ্রান্সিস হেনরার্ড বলেন: ইসলাম ও ইউরোপ একে অন্যের কাছে অপরিচিত কিছু নয়। একই আধ্যাত্মিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক শেকড় থেকে উঠে আসা দু’টি বিষয়। পারস্পারিক এই সম্প্রীতি না থাকলে আজকের ইউরোপ এবং ইসলাম কোনটাই সমৃদ্ধ হতো না।

বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে আয়োজিত এই প্রদর্শনীটি পর্যায়ক্রমে ইটালি, জার্মানিতেও আয়োজন করা হবে। বুলগেরিয়াতে যাওয়ার আগে বসনিয়া- হারজেগোভেনিয়াতেও এই প্রদর্শনী করতে চান আয়োজকরা।