বাংলাদেশের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের নির্মিত সিনেমা নিয়ে এখন চষে বেড়াচ্ছেন গোটা বিশ্ব। নির্মাতা জসিম আহমেদও তাদের মধ্যে একজন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তার নির্মিত দুটি সিনেমা প্রদর্শীত হবে ইউরোপ ও আমেরিকার দুটি শহরে। একটির নাম ‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’ এবং অন্যটি ‘দাগ’।
এরমধ্যে ‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’ প্রতিযোগিতা করছে ন্যাপলস হিউম্যান রাইটস ফিল্ম ফেস্টিভালে। ইতালির ন্যাপলসে মানবাধিকার বিষয়ক সিনেমার এই উৎসবটি আগামী ৬নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র বিভাগে সারা বিশ্ব থেকে স্থান পাওয়া মোট ৯টি ছবির মধ্যে জসিম আহমেদ নির্মিত এই প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি রয়েছে। উৎসবের ওয়েবসাইটে দেয়া লাইনআপ থেকে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া উৎসবে আরো ৭ টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও ৪টি অ্যানিমেশন ছবি মিলিয়ে মোট ২০টি ছবি প্রতিযোগিতা করছে বলে উৎসব সুত্রে জানাগেছে।
বাংলাদশ ছাড়াও ফিলিস্তিন, আমেরিকা, ইতালি, গ্রিস, বেলজিয়াম, জার্মানি, তুর্কি, নরওয়ে ও আর্জেন্টিনার মানবাধিকার বিষয়ক পুর্ণ ও স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্রগুলো রয়েছে।
কোন ভয়েসওভার ও ইন্টারভিউ ছাড়া নির্মিত ‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’-এ বর্তমানে ইংরেজি ও ইতালি ভাষার ওপেন ক্যাপশন রয়েছে। ফ্রেঞ্চ ও স্পেনিস ভাষার ওপেন ক্যাপশনের কাজও চলছে বলে জসিম আহমেদ জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা শরনার্থি ইস্যু ও তাদের দুর্দশার কথা বিশ্বকে জানাতেই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে বলে প্রযোজনা সূত্রে জানা গেছে। ছবিটির সঙ্গিত পরিচালনা ও সাউন্ড ডিজাইন করেছেন রিপন নাথ। স্ক্রিপ্ট লিখেছেন ফরিদ আহমেদ।
অন্যদিকে তার নির্মিত আরেকটি চলচ্চিত্র‘দাগ’-এর যুক্তরাষ্ট্র প্রিমিয়ার হচ্ছে ৩ নভেম্বর শুক্রবার। বিশ্বখ্যাত শর্টসটিভি নেটওয়ার্কে রাত ১০ টায় এর প্রিমিয়ার হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট ও নির্মাতা সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের কোন স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র যুক্তরাষ্ট্রের মুলধারার টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিতে এ বছরে ‘দাগ’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন জসিম আহমেদ। কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭০ তম আসরের শর্টফিল্ম কর্নারে নির্বাচিত হয়ে ছবিটি আলোচনায় আসে। সেখান থেকেই এর টেলিভিশন লাইসেন্সি পায় যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পরিবেশক প্রতিস্টান শর্টস ইন্টারন্যাশনাল।
এ নির্মাতা জসিম আহমেদ জানিয়েছেন, আমাদের টার্গেটই ছিলো বিজয় দিবসের কাছাকাছি সময়ে আমেরিকায় প্রিমিয়ার হবে। এবং ডিসেম্বর ২০১৭ ও জানুয়ারি ২০১৮ জুড়ে হবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিজয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভূমিতে নির্মিত ছবিটি ওয়ার্ল্ড সিনেমা হিসেবে বিশ্ববাসীকে দেখাতে পারার অসাধারণ এক অনুভুতি হচ্ছে যা ভাষায় প্রকাশকরা সম্ভব নয়।