জাতীয় গুরুত্বপুর্ণ দিবস হিসেবে দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো দেশের বৃহত্তম আলিয়া মাদ্রাসা ‘সরকারি মাদ্রাসা ই আলিয়া’ও যথাযোগ্য মর্যাদা পালন করেছে অমর একুশে।
মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে রাজধানীর বকশিবাজারের অবস্থিত এ মাদ্রাসায়।
সকাল সোয়া ছয়টায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমদ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এছাড়া রাত ১২টা ১ মিনিটে নিজস্ব কর্মসূচি হিসেবে মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে অবস্থিত শহীদ মিনারে ফুল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারিরা।
সকাল সাড়ে আটটায় মাদ্রাসার শিক্ষক মিলনায়তনে মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বেলা পৌণে ১২টা পর্যন্ত চলা অনুষ্ঠান শেষে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আমরা নিজস্ব চেতনা এবং সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করেছি।
‘দেশের প্রতিটি মাদ্রাসার যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করা উচিত,’ মন্তব্য করে তিনি বলেন: ভাষা আমাদের নিজস্ব সত্তার সঙ্গে মিশে আছে। সেই ভাষার সঙ্গে জড়িত যে দিবস তা যথাযোগ্যভাবে পালন করা সকলেরই উচিত।’
ধর্মের সঙ্গে একুশের চেতনা বা এর আনুষ্ঠানিকতা সাংঘর্ষিক নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ধর্মের সঙ্গে দোহাই দিয়ে যারা এ দিবসের বিরোধিতা করে সেটা তাদের একান্তই নিজস্ব মতামত। ধর্মের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই।’
‘আজ সকালে যখন নিজ বাড়ি থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশে আসছিলাম নরসিংদীর মাধবদীতে দেখলাম মাদ্রাসার ছোট ছোট ছেলে মেয়ে ফুল হাতে শহীদ মিনারের দিকে যাচ্ছে। দেখে আমার বুকটা ভরে গেলো।’
অধ্যক্ষ তার নিজ কার্যালয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথা বলার সময় পাশেই বসে ছিলেন অধ্যাপক ড. হুসাইন মোহাম্মদ ফারুক। তাফসির বিভাগের বিভাগীয় এ প্রধান বলেন, ‘আজ সকালে যখন নিজ বাড়ি থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশে আসছিলাম নরসিংদীর মাধবদীতে দেখলাম মাদ্রাসার ছোট ছোট ছেলে মেয়ে ফুল হাতে শহীদ মিনারের দিকে যাচ্ছে। দেখে আমার বুকটা ভরে গেলো।’
মাদ্রাসা সম্পর্কে দেশের মানুষের যে সাধারণ ধারণা তার সঙ্গে মাদ্রাসার প্রকৃত অবস্থার অনেক পার্থক্য রয়েছে উল্লেখ করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
‘দেশের মানুষ কী মনে করে জানি না। তবে আমরা কেবল অমর একুশে ফেব্রুয়ারিই নয়, প্রতিটি জাতীয় দিবসই যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি রাষ্ট্রের চেতনার সঙ্গে আমরা সম্পর্কিত, আমরা বাইরের কেউ না।’
তবে কওমী মাদ্রাসাগুলোর চিত্র কিছুটা ভিন্ন বলে স্বীকার করে প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থীর এ মাদ্রাসা প্রধান বলেন, ‘তাদের ব্যাপারটা আলাদা। আপনি আমাদের মাদ্রাসা ঘুরলেন। একটি কওমী মাদ্রাসাও ঘুরে দেখতে পারেন। পার্থক্যটা টের পাবেন।’
আলিয়া মাদ্রাসায় সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলোও অমর একুশের কর্মসূচি পালন করেছে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।