বরেণ্য সংগীতশিল্পী আব্দুল জব্বারের দুটি কিডনিই অকার্যকর। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। ডায়ালাইসিসের উপর বেঁচে আছেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে ভর্তি আছেন গত মঙ্গলবার থেকে। এ অবস্থায় বিদেশ নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হলে তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন স্ত্রী শাহীন জব্বার।
গতকাল ৭ আগস্ট সোমবার দুপুরে চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর অবস্থা খুবই খারাপ। চোখের সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছে রাষ্ট্রের এত বড় সম্পদ। অথচ চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই।’
আব্দুল জব্বারের চিকিৎসায় সরকারের গাফিলতির অভিযোগ এনে শাহীন জব্বার বলেন, ‘সরকার তাকে বাঁচানোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাদের অবস্থা এমন যে, শিল্পী বুড়ো হয়ে গেছেন। দেশকে আর কিছু দেওয়ার নেই। এখন সে মরলেই কী, বাঁচলেই কী!’
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিমবঙ্গের ক্যাম্পে ক্যাম্পে আব্দুল জব্বার হারমোনিয়াম নিয়ে গণসংগীত গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করেন। সে সময় গান গেয়ে পাওয়া ১২ লাখ ভারতীয় রুপি তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেন। সে ঘটনা উল্লেখ করে আব্দুল জব্বারের স্ত্রী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমার স্বামী কত কষ্ট করে ১২ লাখ রুপি সংগ্রহ করেছিলেন, তা আমি জানি। সে সময় আমিও তার সঙ্গে ছিলাম। সবকিছুর প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি। ১৯৭১ সালের সেই ১২ লাখ রুপি এখনকার বাজারে কয় কোটি টাকা হবে? তখন স্বর্ণের ভরি ছিল ১০০ টাকা। সেই সময়য়ের ১২ লাখ রুপি হলে আজ আমার স্বামীকে এভাবে বিনা চিকিৎসায় মরতে হয় না।’
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘সেই ১২ লাখ রুপি এখনকার বাজারে যত টাকা হয়, তা ফেরত দিক সরকার। আমি স্বামীকে বিদেশ নিয়ে চিকিৎসা করাব।’
আইসিইউর কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, গত ৩১ মে কিডনি, হৃৎপিণ্ড, প্রস্টেটসহ নানান শারীরিক সমস্যা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন আব্দুল জব্বার। তার অবস্থা অবনতি হলে গত মঙ্গলবার আইসিইউতে নেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়। আবার দুই একদিনের ভেতর ডায়ালাইসিস করতে হবে বলে জানান ডাক্তার।