গুলশানের সুবাস্তু টাওয়ারে সিলগালা করা আপন জুয়েলার্সের শোরুমে আবারো অভিযান শুরু করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। সোমবার বিকেলে শুরু হওয়া অভিযান এখানো চলছে। অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক সাইফুর রহমান।
শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বিকেলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, অভিযানে যদি অবৈধ কিছু পাওয়া যায়; তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
সাইফুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: গতকাল গুলশান এরিয়ার শপিং সেন্টারগুলো বন্ধ থাকায় সোমবার আমরা আবার অভিযান পরিচালনা করছি। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির কয়েকজন প্রতিনিধিও উপস্থিত রয়েছেন।
গুলশানের আপন জুয়েলার্সের শাখা থেকে কি পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার জব্দ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন: এখনো অভিযান চলছে। অভিযান শেষ হলে আমরা গণমাধ্যমকে জানাব।
এর আগে রোববার বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বাবা দিলদার আহমেদের মালিকানাধীন আপন জুয়েলার্সের গুলশান, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কোয়ার শাখায় অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা। অভিযানে ২৮৬ কেজি স্বর্ণ ও ৬১ গ্রাম হীরা ব্যাখ্যাহীনভাবে মজুদ রাখার দায়ে তা সাময়িক আটক করা হয়।
রোববার শুল্ক গোয়েন্দার দল আপন জুয়েলার্সের গুলশান, উত্তরা, মৌচাক ও সীমান্ত স্কোয়ারের শাখায় অভিযান চালিয়ে ২৮৬ কেজি স্বর্ণ ও ৬১ গ্রাম হীরা সাময়িক আটক করে। এগুলো আইন অনুসারে সিলগালা করে তাদের হেফাজতে দেয়া হয়।
শুল্ক গোয়েন্দার অভিযানে ব্যাখ্যাহীনভাবে মজুদ স্বর্ণ ও ডায়মন্ড আটকের ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের মালিকদের শুল্ক গোয়েন্দা সদরদপ্তরে তলব করা হয়েছে।
আগামী ১৭ তারিখ বুধবার বেলা ১১ টায় তাদের শুল্ক গোয়েন্দার কাকরাইলের সদর দপ্তরে কাগজপত্রসহ হাজির হতে বলা হয়েছে।
এর আগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ ও শাফাত আহমেদের ব্যাংক হিসাব চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠায় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
গত ২৮ মার্চ বনানীতে দ্য রেইনট্রি হোটেলে বন্ধুর মাধ্যমে এক জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী। এরপর ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখে ধর্ষকরা।
যাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, তাদের একজন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে সাফাত আহমেদ।
প্রাণনাশসহ বিভিন্ন হুমকি উপেক্ষা করে ঘটনার একমাসের বেশি দিন পর ওই দুই তরুণী ৪ মে বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে যান।
তবে থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে তাদেরকে হয়রানী করে বলে অভিযোগ ওঠার ৪৮ ঘণ্টা পর ৬ মে ওই অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে।
গত ১১ মে সাফাত ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর দিন আদালতে তোলা হলে আদালত সাফাতকে ৬ দিন এবং সাদমান সাকিফকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।