চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আগামী বছর থেকে মোবাইল নম্বর না বদলে অপারেটর বদল

বহুল প্রতীক্ষিত মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) চালু করতে বাংলাদেশ-স্লোভেনিয়ার যৌথ কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ন বিডি টেলিটেককে লাইসেন্স নোটিফিকেশন পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

নোটিফিকেশন পত্র হাতে পেয়ে এই যৌথ কনসোর্টিয়ামের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পোস্ট পেইড-প্রিপেইড গ্রাহকরা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চের পর নম্বর না বদলে অপারেটর পরিবর্তনের সুবিধা পাওয়া শুরু করবেন।

এ সেবা চালু হওয়ার পর গ্রাহকরা ৩০ টাকা ফি দিয়ে নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তার অপারেটর বদলে যাবে। পুনরায় অপারেটর পরিবর্তন করতে হলে তাকে ৯০ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

মঙ্গলবার বিটিআরসি’র প্রধান সম্মেলন কক্ষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে এমএনপি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজকের দিনটি বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগের ইতিহাসে একটি মাইলফলক সংযোজন। আমরা প্রথম থেকেই মোবাইলফোন গ্রাহকদের সুবিধার জন্য, গ্রাহকদের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য অনবরত চেষ্টা করছি। সেরকমই একটি পদক্ষেপ হচ্ছে এমএনপি।’

এমএনপি বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরার পর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইনফোজিলিয়ন বিডি টেলিটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইনের হাতে নোটিফিকেশন পত্র তুলে দেন তিনি। গত ১ নভেম্বর এই নোটিফিকেশন পত্র ইস্যু করা হয়।

লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী, ইনফোজিলিয়ন বিডি টেলিটেক লাইসেন্স পাওয়ার পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে দেশের মোট মোবাইলফোন গ্রাহকের কমপক্ষে ১ শতাংশ, ১ বছরের মধ্যে ৫ শতাংশ এবং ৫ বছরের মধ্যে ১০ শতাংশকে এমএনপি সেবার আওতায় আনতে হবে।

এমএনপি গাইডলাইনের শর্তানুযায়ী, লাইসেন্স অ্যাকুইজিশন ফি হিসেবে ইনফোজিলিয়নকে ১০ কোটি টাকা, বাৎসরিক লাইসেন্স ফি ২৫ লাখ টাকা, দ্বিতীয় বছর থেকে ১৫ শতাংশ হারে রেভেনিউ শেয়ারিং ও সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে বছরের অডিট করা আয় থেকে ১ শতাংশ এবং ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে বিটিআরসিকে ১০ কোটি টাকা দিতে হবে।

ইনফোজিলিয়ন বিডি টেলিটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন

ইনফোজিলিয়ান বিটিআরসি গাইড লাইনের সব শর্তপূরণ এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চের পর বাংলাদেশের মোট মোবাইলফোন গ্রাহককে সেবা দিতে সক্ষম বলে জানান যৌথ কনসোর্টিয়ামটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন।

আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ-স্লোভেনিয়ার যৌথ কনসোর্টিয়ামকে লাইসেন্স নোটিফিকেশন পত্র দিয়ে নিজেও আশাবাদী বিটিআরসি চেয়ারম্যান।

নোটিফিকেশন পত্র দেয়ার মাধ্যমে মাধ্যমে বহুদিনের চেষ্টা আলোর মুখ দেখছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন,‘আমরা অনেকদিন ধরেই এই সেবাটা গ্রাহককে দিতে চেষ্টা করে। তবে নানা কারণে এটা হচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত গত ১৫ অক্টোবর এনএনপি অনুমোদন করে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে শুধু বিটিআরসি নয় প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর আন্তরিকতা ছিলো।’

এমএনপি গ্রাহকের সেবা বৃদ্ধি এবং মোবাইলফোন অপারেটরদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি কোনো অপারেটরের সেবা গ্রাহকের অপছন্দ হয় তাহলে আর নম্বর পরিবর্তন করতে হবে না। এখন আর একটি মোবাইলফোনে একাধিক সিমও ব্যবহার করতে হবে না। একটি নম্বর দিয়ে পছন্দমতো অপারেটরের সেবা উপভোগ করতে পারবে গ্রাহকরা। এতে অপারেটররা তাদের সেবার মান আরও ভালো করার ব্যবস্থা নেবে। এটাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য।’

২০১৩ সালে বিটিআরসি’র ১৫২তম সভায় অনুমোদন পাওয়ার চার বছর পর অবশেষে বাস্তব হতে যাচ্ছে এমএনপি। বর্তমানে বিশ্বের ৭২ টি দেশে এই সেবা চালু আছে। প্রতিবেশি দেশ ভারতে এমএনপি চালু হয় ২০১১ সালে এবং পাকিস্তানে এমএনপি চালু হয় ২০০৭ সালে।