চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ও মাশরাফীর পর্যবেক্ষণ

এক দশক পর টেস্ট ক্রিকেটের বয়স ছাড়িয়ে যাবে দেড় শতাব্দী। মহাকালের এই সুদীর্ঘ সময়ে ‘জেন্টল ম্যান গেমে’র সেরা দল বাছাই করতে গেলে সবার আগে আসবে অস্ট্রেলিয়ার নাম। এই সত্য স্বীকার করে নিতে ক্রিকেট ইতিহাসের মনোযোগী পাঠক হওয়ার দরকার নেই। কিন্তু কোথায় তাদের এই শক্তির উৎস— পাওয়ার হাউজ? টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি চিরঅনুরাগ লালন করা মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা খোঁজ দিয়েছেন সেই পাওয়ার হাউজের, যা দশকের পর দশক ধরে সঞ্জীবনী সুধা দিয়ে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটকে।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শুরুর আগে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপে মাশরাফী বলেন, ‘‘এই কথার মূল্য হয়তো অনেকে বুঝবে না— দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে তাদের যে আবেগ এবং নিবেদন, তা না থাকলে কখনোই পারফর্মার হওয়া যায় না। ওরা যে আবেগ ও গুরুত্ব দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলে তার একটা ফিডব্যাক আছে। আমার মনে হয়, ওরা যদি ‘বি’  দল নিয়েও খেলতে আসে, আমাদের জন্য (তাদের বিপক্ষে ভালো খেলা) কষ্টসাধ্য।’’

এক দশকেরও বেশি সময় আগে টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে এসেছিলো অস্ট্রেলিয়া। সে সময় টেস্ট দলে ছিলেন মাশরাফীও। ওই সিরিজের দুই টেস্টে আট উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সেই দিনগুলোতে অস্ট্রেলিয়া দলকে মনে করা হতো ইতিহাসেরই ‘সেরা’ দল। সেই দলে খেলতেন ম্যাথু হেইডেন, মাইক হাসি, রিকি পন্টিং, ডেমিয়েন মার্টিন, মাইকেল ক্লার্ক, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। পেস আক্রমণে ছিলেন জেসন গিলেস্পি, ব্রেট লি। স্পিনে শেন ওয়ার্ন, স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল। তাদের সমন্বয়ে অস্ট্রেলিয়া হয়ে উঠেছিলো হিমালয় সমান উঁচুতে থাকা এক দল।

এখন আর তারা বলেকয়ে সব দলকে হারিয়ে দিতে পারে না। একদল কিংবদন্তী ক্রিকেটার কাছাকাছি সময়ে  অবসর নিয়ে নেয়ায় অস্ট্রেলিয়াকে যেতে হয়েছে বড় পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে। যার প্রভাব পড়েছে দলের পারফরম্যান্সেও। বর্তমান অস্ট্রেলিয়াকে ঠিক ওই সময়ের সমীহটা দিতে চান না অনেকেই। কিন্তু মাশরাফী সেই দলে নন।

‘এটা (অস্ট্রেলিয়া আগের মতো শক্তিশালী নয় ) আপনাদের ভুল ধারণা। এই দল ভারত সফরে গিয়ে প্রায় জিতেই যাচ্ছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা পারেনি। তারপরও আমি মনে করি তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির দলও অনেক পেশাদার।’

মাশরাফী অকপটে স্বীকার করেন, এখনও অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় একাদশকে মোকাবেলা করা অনেক চ্যালেঞ্জিং।

অস্ট্রেলিয়া দলে সব সময়ই এমন কিছু ক্রিকেটার থাকে যারা একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। সুতরাং অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের সঙ্গে জিততে হলে বাংলাদেশকে চূড়ান্ত রকমের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আগে এশিয়ার কোনও দেশে এসে অস্ট্রেলিয়া কেমন করেছে, সেই সব ইতিহাস টেনে আনলে মুশফিক-তামিমদের ওপর শুধু চাপই বাড়ানো হবে বলে মন্তব্য মাশরাফীর।

‘আমরা যদি ভালো খেলি; কোনও বোলার যদি অসাধারণ কোনও স্পেল করে দেয় বা টপঅর্ডারে তামিম-ইমরুল, যারাই আছে- তারা যদি বড় কোনও ইনিংস খেলে দেয় তাহলেই কেবল পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে, প্রতিবারের প্রতিটি মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে থাকা দল।’

পরামর্শের বেড়াজালে অনুজদের জন্য মাশরাফী কি সতর্কবাণী উচ্চারণ করলেন?