ভারতের উত্তর প্রদেশের জঙ্গল থেকে পাওয়া মেয়েটি জঙ্গলে বানরের সাথে বসবাস করতো না বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। উদ্ধারের সময় মেয়েটিকে আধুনিক যুগের জঙ্গল বুকের প্রধান চরিত্র মোগলির সঙ্গে তুলনা করলেও ডাক্তাররা দাবি করছেন এর পেছনের ঘটনা লোমহর্ষক।
উত্তর প্রদেশের পুলিশ ৮ বছর বয়সি মেযেটিকে কোন রকম কাপড় ছাড়া বানরের সঙ্গে খেলতে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করে। সে সময় তার চলাফেরা অনেকটেই বানরের মত ছিল বলে জানায় উদ্ধারকারীরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, মেয়েটি আসলে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভারসাম্যহীন।
জেলার প্রধান বন কর্মকর্তা জিপি সিং বলেন, সম্প্রতি মেয়েটিকে জঙ্গলে ফেলে যাওয়া হয়েছে। তাকে জঙ্গলের খুব গভীর অংশে পাওয়া যায়নি।
তিনি মনে করেন, মেয়েটি কথা না বলতে পারায় তার পরিবার তাকে বনের পাশের রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। যদি মেয়েটি বানরের সাথে বসবাস করেও থাকে তাহলে অল্প কিছু দিনের জন্য করেছে বেশি দিনের জন্য নয়।
ওই বন কর্মকর্তার দাবি, বেশি দিন বানরের সঙ্গে বসবাস করলে তা সিসিটিভিতে অবশ্যই দেখা যেত। মেয়েটিকে প্রথম দেখায় মনে হবে ৮ অথবা ৯ বছরের কিন্তু তার মুখের অঙ্গভঙ্গি বলে দেবে সে শুধু মানসিকই নয় শারীরিকভাবেও অসুস্থ।
মেয়েটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেলে বোর্ডের প্রধান বলেন, জানুয়ারি থেকে চিকিৎসা করা হচ্ছে। তবে সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না ঠিক কখন তাকে ফেলে রেখে যাওয়া হয়।
ভারতীয় পরিবারে মেয়ে শিশুকে অনেকেই গ্রহণ করতে চায় না। তার উপরে শিশুটি মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়া এবং অন্যান্য তথ্য প্রমাণ করে তাকে জঙ্গলে ফেলে যাওয়া হয়।
জেলা মেডিকেল প্রধান অঙ্কুর লাল বলেন, শিশুটির অসুস্থতার ধরণ নিয়ে এখনো নিরীক্ষা চলছে। তবে বনে বড় হয়েছে এটি অলৌকিক চিন্তা।
তিনি বলেন, যখন তাকে পাওয়া যায় যোগাযোগসহ নানা বিষয় দেখে মনে করা হয়েছিলো সে বনে বসবাস করেন। কিন্তু চিকিৎসার পর দ্রুত আরোগ্য লাভ করায় মনে করা হচ্ছে জন্ম থেকেই শিশুটি বনে বসবাস করছে না।
পরিবারই শিশুটিকে দেখাশোনা করতে চায়নি বলেই তাকে ফেলে যাওয়া হয়েছে দাবি করে মানবাধিকার কর্মী রনজনা কুমারি বলেন, কিছু পরিবারে ছেলে শিশুর চেয়ে মেয়ে শিশুর কদর কম; এমনকি খরচের ভয়ে আমাদের সমাজের বাস্তবতায় মেয়েদেরকে বর্জন করা হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে অক্ষম শিশুদের লালন পালনে দরিদ্র্য পরিবারগুলোকে সহয়তা করা উচিত জানিয়ে তিনি আরো বলেন, যদি মেয়ে হয়, তাহলে সেই সহায়তা দ্বিগুন হওয়া দরকার।