রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক মাশরাফীর একটি ওভারেই বাঁক নিয়েছে ম্যাচ। বিফলে গেছে সাব্বির-নাসিরের অনবদ্য এক জুটি। সিলেট সিক্সার্সের দরকার তখন ৪ ওভারে ৩৫ রান, হাতে ৭ উইকেট। শতরানের জুটি গড়ে অবিচ্ছিন্ন সাব্বির-নাসির। মাশরাফীর ওই ওভারটিতে নিতে পারলেন মাত্র ২ রান। পরে বল হাতে পেরেরা-রুবেলরাও জাগলেন। রান আটকে হারতে বসা ম্যাচ ৭ রানে জিতে নেয় রংপুর। আর শেষ ওভারে সিলেটের দরকার ছিল ১৯। নাসির থাকার পরও এলো মাত্র ১১ রান।
সবাই অপেক্ষা করছিল হঠাৎ ম্যাচে বাঁক এনে দেয়া মাশরাফীই আসবেন সংবাদ সম্মেলনে। কিন্তু এলেন ম্যাচসেরা ক্রিস গেইল। ৫০ রানের ইনিংস খেলে ১৬৯ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে দেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটিংদানব। তবে নিজের ব্যাটিংয়ের চেয়ে সাব্বির-নাসিরের ১১৭ রানের জুটি নিয়েই কথা দীর্ঘ করলেন তিনি। আর অল্প কথায় বুঝিয়ে দিলেন মাশরাফীর ম্যাজিক ওভারটির গুরুত্ব।
‘ওই ওভারটিই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বলতেই হবে নাসির ও সাব্বির দারুণ ব্যাট করেছে। দলকে জয়ের অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল। ওদেরকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর ওরা ভালোভাবে টেনেছে দলকে। তবে আমাদের বোলাররা শেষদিকে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরেছে। অধিনায়কের এক ওভারে মাত্র ২ রান দেয়া ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এরপর রুবেল ও থিসারা দারুণভাবে শেষ করেছে।’
অবশ্য শুরুর কাজটা করে দিয়েছিলেন সোহাগ গাজী, মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, রুবেল হোসেন মিলেই। ২৫ রানের মধ্যে বাবর আজম (২), ধানুস্কা গুনাথিলাকা (৮), আন্দ্রে ফ্লেচারকে (১২) ফিরিয়ে। তখন ওভারও পেরিয়ে গিয়েছিল চারটা। পরে মাশরাফীর ম্যাজিক ওভারের আগ পর্যন্ত কেবলই সাব্বির-নাসিরের দুর্দান্ত ব্যাটিং উপভোগ করেছে দর্শকরা।
দুজনের জুটিতে ১০০ রান চলে আসে ৬৬ বলে। শেষ পর্যন্ত ১১৭ রানের জুটিটি ভাঙেন পেরেরা, সাব্বিরকে লংঅনে ক্যাচ বানিয়ে। ৪৯ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় সাজান ৭০ রানের ইনিংসটি। ৩২ বলে ফিফটি লংঅফের উপর দিয়ে পেরেরাকে ছক্কা হাঁকিয়ে। আর নাসির ৪ চার ও ২ ছক্কায় পূর্ণ করেন বিপিএলের পঞ্চম আসরের প্রথম ফিফটি। সিলেটের অধিনায়ক অপরাজিত থেকে যান ৫০ রানে।
ম্যাচটা হতে পারত সাব্বির-নাসিরেরই। শেষটায় এসে কেবল পারেননি। শুরুতেই টপঅর্ডারে ধসের পর দুজনে যেভাবে খেলেছেন, তাতে বাহবা তো প্রাপ্যই! বিপিএলের চতুর্থ উইকেট জুটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান না আনতে পারলে যে ম্যাচটা এমন জমে ওঠে না, সুযোগ হয় না মাশরাফীর ম্যাজিক ওভারটি দেখার।