চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অর্থ পাচারকারীদের শাস্তি চায় টিআইবি

প্যারাডাইস পেপারসে বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আসায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, আন্তর্জাতিক সহায়তাসহ যথাযথ প্রক্রিয়ায় পাচার করা সেইসব অর্থ ফেরত আনার পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

সম্প্রতি অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) প্রকাশিত প্যারাডাইস পেপারসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস করা হয়।

সেখানে ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ভারতের মেগা স্টার অমিতাভ বচ্চনসহ অনেকের নাম উঠে আসে।

গোপন ওই নথি প্রকাশের কয়েকদিন পর উঠে আসে বাংলাদেশের ১০ জন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। তাতে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নামও রয়েছে।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্যারাডাইস পেপারসে বাংলাদেশের যে সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে পাচারকরা টাকা ফিরিয়ে আনা এবং এ ব্যাপারে জড়িতদের অপরাধ প্রমাণ সাপেক্ষে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে পানামা পেপারসে বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যক্তির নাম প্রকাশিত হলেও সে ব্যাপারেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় টিআইবি হতাশা।’

কর ফাঁকি দেয়ার উদ্দেশে অর্থপাচার হচ্ছে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিদ্যমান আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে দুর্নীতি-সহায়ক দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করে মূলত কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যেই দেশের বাইরে নামে-বেনামে ব্যাপক অর্থ পাচার করা হচ্ছে, জাতীয় অর্থনীতিতে যার প্রভাব গগনচুম্বী।

অর্থপাচারে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অন্যতম দায়িত্ব এরূপ অর্থ পাচার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং পরিচয় ও অবস্থান নির্বিশেষে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের সম্মুখীন করা।

“অ্যাপেলবির বা মোসাক ফনসেকার মতো আরো অনেক প্রতিষ্ঠান অর্থ পাচার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত এবং যে তথ্য ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে তা সার্বিক পরিস্থিতির একাংশ মাত্র হতে পারে। এই অশুভ চক্রের সাথে বিশ্বের বহু নামিদামি ব্যাংক ও অ্যাকাউন্টিং কোম্পানিসহ অসংখ্য মধ্যস্থতাকারী জড়িত রয়েছে।”

ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘প্যারাডাইস ও পানামা পেপারসে প্রকাশিত তথ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধান, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও নামিদামি প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা আরো একবার প্রমাণ করল যে, দুর্নীতি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। যা থেকে কোনো দেশই মুক্ত নয়। কর ফাঁকি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচারের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা আন্তর্জাতিক অর্থ ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ব্যাপক ঘাটতির উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত।’