বিদেশগামী শ্রমিকদের কল্যাণে আগামী বছর সচেতনতামূলক একটি বিশেষ প্রকল্প চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) জাবেদ আহমেদ।
বুধবার রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে ‘ব্র্যাক অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৬’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জাবেদ আহমেদ বলেন, প্রশিক্ষণ ছাড়া শ্রমিকরা বিদেশে যাক, আমরা চাই না। কারণ প্রশিক্ষণের জন্য আমাদের ৭০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলোতে প্রতিবছর দুই লাখ কর্মী প্রশিক্ষণ নিয়ে বের হচ্ছে।
এছাড়া শ্রমিকদের বিদেশে পাঠানোর জন্য সরকার ডেটাবেজ তৈরি করেছে। সেই ডেটাবেজ থেকে বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু কোনো কোনো দেশ তা পালন না করে ডেটাবেজের বাহিরের জনবলও নিচ্ছে। আর ওইসব শ্রমিকরাই প্রবাসে নানা সমস্যায় পড়েন।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের আরো বেশি সতর্ক করে তুলতে আগামী বছর সচেতনতামূলক একটি বিশেষ প্রকল্প চালু করা হবে। তা ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হবে। শ্রমিকরা যাতে বিদেশে গিয়ে হয়রানি না হন সে বিষয়ে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
অভিবাসীদের মানবিক মর্যাদা দিতে হবে উল্লেখ করে বিশিষ্ট কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মুকসুদ বলেন, শ্রমিকরা আমাদের টাকা দিচ্ছে, কিন্তু আমরা তাদেরকে কি দিচ্ছি। তাদের মানবিক মর্যাদা দিতে হবে। বিমান বন্দরেও শ্রমিকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। সেখানে তাদের জন্য আলাদা ডেস্ক করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ মুসা বলেন, অভিবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। কিন্তু বিদেশে তারা মানবাধিকার পাচ্ছে কি-না তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই দক্ষ জনশক্তির অভাব দূর হবে। তবে আরো উন্নত রাষ্ট্রে মানসম্মত কাজে কিভাবে শ্রমিক পাঠানো যায় তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
অনুষ্ঠানে দেশের অভিবাসীদের নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করায় ১০ জন সংবাদকর্মীকে ‘ব্র্যাক অভিবাসন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৬’ প্রদান করা হয়েছে। রেডিও, টেলিভিশন, প্রিন্ট, অনলাইন ও স্থানীয় পত্রিকা-এই পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের আওতায় এ পুস্কার দেয়া হয়েছে।
যারা পুরস্কার পেলেন:
প্রিন্ট মিডিয়া ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছেন- ডেইলি স্টারের বেলাল হোসেন বিল্পব, দ্বিতীয় হয়েছে- ঢাকা ট্রিবিউনের আদিল সাখাওয়াত ও তৃতীয় হয়েছে- দৈনিক সমকালের আবু জর আনসার উদ্দিন আহমেদ।
টেলিভিশনের অভিবাসন বিষয়ক অনুষ্ঠান ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে এনটিভির ডিবেট ফর ডেমোক্রেসী বিভাগের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরি কিরণ।
টেলিভিশনের অভিবাসন বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য প্রথম হয়েছেন মাছরাঙা টেলিভিশনের মাশরেক রাহাত, দ্বিতীয় হয়েছেন- এটিএন নিউজের সাবিনা ইয়াসমিন ও তৃতীয় হয়েছেন-বাংলা ভিশনের মিরাজ হোসেন গাজী।
রেডিও বিভাগে প্রথম হয়েছেন- বাংলাদেশ বেতারের মুহাম্মদ মুসতাফিজুর রহমান।
অনলাইন ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছেন- দৈনিক প্রথম আলোর (অনলাইন ভার্সনের) মো. শরিফুল ইসলাম হাসান।
আঞ্চলিক সংবাদপত্র ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছেন- দৈনিক ইত্তেফাকের ময়মনসিংহ (ত্রিশাল) প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ।