সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়নের অভিযান, ভবন থেকে ৭৮ জনকে উদ্ধার, সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর ব্রিফিং শেষে পুলিশ চেকপোস্টে বিস্ফোরণ, হতাহত এবং ১৪৪ ধারা জারি – এমন ধারাবাহিক ঘটনা বাংলাদেশের বাইরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও উঠে এসেছে।
একেবারে প্রতি মুহূর্তের আপডেট না হলেও মোটামুটি ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বাংলাদেশের এই জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশ করছে।
বিবিসি এ বিষয়ে সর্বশেষ সংবাদে লিখেছে, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জোড়াবোমা হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও চার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে বহু মানুষ। সিলেটে কোমান্ডোরা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের একটি দলকে আস্তানা থেকে বের করার চেষ্টা চালানোর সময় বিস্ফোরণগুলো ঘটে।
বিবিসিতে আরও বলা হয়েছে, এর আগে ভবনটির অবরুদ্ধ হয়ে পড়া অধিবাসীদের বিভিন্ন ফ্ল্যাট থেকে বের করে আনা হয়। তবে সন্দেহভাজনরা আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমসেও হতাহতের বিষয়টি মোটামুটি একইভাবে লেখা হয়েছে। তবে সেখানে ‘সন্দেহভাজন’ না লিখে স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে, গোপন জঙ্গি আস্তানায় কমান্ডোদের অভিযান চলাকালে তার কাছাকাছি দু’টি বোমা বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণটি দেশটির প্রধান বিমানবন্দরের চেকপয়েন্টের কাছে এক আত্মঘাতী হামলাকারী নিজেকে উড়িয়ে দেয়ার একদিন পরই ঘটলো বলে প্রসঙ্গ টানা হয়েছে সেখানে।
ইন্ডিয়াটুডে’র প্রতিবেদনের সংবাদটি তুলনামূলক আগের। সেখানে জঙ্গি আস্তানায় কমান্ডো অভিযান চলার সময় কাছে দু’টি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের কথা বলা উল্লেখ করে নিহতের সংখ্যা বলা হয়েছে ‘কমপক্ষে চারজন’ এবং আহত ৩০।
পাকিস্তানি পত্রিকা ডনের অনলাইনে সর্বশেষ আপডেটে বলা হয়েছে, দু’টি ‘শক্তিশালী’ বোমা হামলায় কমপক্ষে ছ’জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছে। সেখানে জঙ্গি আস্তানায় সেনা কমান্ডোদের জোর অভিযানের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এবং কাতার ট্রিবিউনে আবাসিক ভবনে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সংবাদ প্রকাশ করেছে। তবে দু’টি রিপোর্টই শনিবারের এবং আল-জাজিরায় তিনজন নিহত ও ২৬ জন আহতের খবর বলা হলেও কাতার ট্রিবিউনে হতাহতের কথা বলা হয়নি।
এছাড়াও আল-জাজিরায় ‘সম্ভাব্য ‘চরমপন্থি’ আস্তানা’ লেখা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটেও জঙ্গি আস্তানায় ছ’জন নিহতের তথ্যসহ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। রয়টার্সের বরাত দিয়েই ইউএস নিউজ এবং হাফিংটন পোস্ট রিপোর্ট করেছে। তবে হাফিংটন পোস্টের রিপোর্টটি পুরনো। সেখানে তিনজন নিহতের কথা উল্লেখ করা আছে।
শনিবার সন্ধ্যায় ওই হামলায় জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলামসহ নিহত হন ৬ ব্যক্তি। এ হামলায় আহত হয় আরও ৩০ জন।
গুরুতর আহত র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।