চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অতৃপ্তি নিয়েই শেষ হলো প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর

আলোচিত সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার চার দিনের এ সফরের আগে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ আশাবাদী ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চুক্তি হয়নি। তা না হওয়ার পেছনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর বিরোধিতাকেই দায়ী করা হচ্ছে। সেই দায় কার? বাংলাদেশের মানুষ তা নিয়ে ভাবছে না। তাদের কাছে দিনের আলোর মতো পরিস্কার; চুক্তিটি হয়নি। আর এটাই এ সফরের বড় অতৃপ্তি। আমরা জানি প্রায় দুই বছর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। সেইবারও অনেকটাই নিশ্চিত ছিল তিস্তা চুক্তি হচ্ছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণেই তা আটকে যায়। মোদি সেদিন বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে বলে গিয়েছিলেন, দ্রুতই তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন সমস্যার সুরাহা হবে। দুই বছর পর তাই শেখ হাসিনার এই সফর হয়ে উঠেছিল মূলত তিস্তা ইস্যু সমাধানের সফর। কিন্তু আবার দুই বছর আগের সেই চিত্র। সেই আশ্বাসের বাণী। শনিবার দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনেকগুলো চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার আগ মুহূর্তে ভারতের পক্ষে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিষয়ক যুগ্ম পররাষ্ট্র সচিব শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথান নিশ্চিত করে বলেন, ‘এই সফরে তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। চুক্তিটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। এর জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে।’ কথাটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ সেই ২০১১ সাল থেকেই এর খসড়া চূড়ান্ত হয়ে আছে। এখানেই শেষ নয়; উল্টো মমতা বন্দ্যোপাধায় বাংলাদেশকে বিভ্রান্তিকর এক প্রস্তাব দিয়ে বলেছেন, উত্তরবঙ্গের তোর্সা, জলঢাকাসহ চারটি নদীর পানি তিস্তার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এমন প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ এবং কূটনীতিকরা চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে সাক্ষাতকারে বলেছেন, তিস্তা চুক্তি হবে অনেকদিন আগেই চূড়ান্ত হওয়া খসড়া অনুসারে। সেখান থেকে সরে আসার কোন সুযোগ নেই। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প প্রস্তাবও গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা মনে করি, বাংলাদেশকে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বলি করা ঠিক হবে না। গত কয়েক বছর বাংলাদেশ ভারতকে বহুক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এখনো দিয়ে যাচ্ছে। এখন ভারতেরও উচিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন করে সেই ঋণ শোধ করা। নরেন্দ্র মোদির কথায় আমরা আশা রাখছি; অল্প সময়ের মধ্যেই ভারত তা করে দেখাবে।