চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় তরিকত ফেডারেশন

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে একাধিক দলের কাছ থেকে বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার প্রস্তাব আসলেও সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন চায় বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন।

এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ব্যক্তি ও দল যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আইনী ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অন্যতম শরিক এই দল।

বুধবার সকালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপে এসব প্রস্তাবসহ আরও ১২ দফা প্রস্তাব দেয় সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর নেতৃতাধীন তরিকত ফেডারেশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে অংশ নেয় তরিকত ফেডারেশনের ১৬ জন প্রতিনিধি।

সংবিধানের বাইরে না যাওয়ার কথা উল্লেখ করে দলের চেয়ারম্যান মাইজভাণ্ডারী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। এ সরকারের অধীনে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দল নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে এর অধীনে নির্বাচন করতে হবে।

সংলাপে ১২টি প্রস্তাবনা কমিশনকে দেয়ার বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন চাই। স্ট্রাইকিং র্ফোস সেনাবাহিনীকে নিয়োগ দিতে হবে।

তরিকত ফেডারেশনের অন্যান্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনের সময় কোন অপশক্তি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বাচনি পরিবেশ বিঘ্নিত করতে না পারে এবং জনগণের মালামাল ও নিরাপত্তা গ্রহণের জন্য ইসির তত্ত্বাবধায়নে স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ে বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করা, নির্বাচনি ব্যয় ২৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৫০ লক্ষ করা, ভেট গ্রহণে ইভিএম পদ্ধতি চালু করা।

রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাবও দেয় দলটি। এছাড়া নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশি শক্তির ব্যবহার রোধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মতাদর্শিক দল নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার দাবি জানায় তরিকত ফেডারেশন।

তফসিল ঘোষণার ৬০ দিন আগে ভোটার তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এবং নির্বাচনের আগে দলগুলো সড়ক বন্ধ করে যেন সভা সমাবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তাবও আসে দলটির পক্ষ থেকে।

বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে ইসির সংলাপসূচি থাকলেও দলটি ‘বিশেষ কারণে আসতে না পারায়’ নির্ধারিত সংলাপ হয়নি।

এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে ২১টি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করল নির্বাচন কমিশন। গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ২৪ আগস্ট থেকে দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

ইতোমধ্যেই সবগুলো দলের সঙ্গে সংলাপের সূচি প্রকাশ করেছে ইসি। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৮ অক্টোবর এবং বিএনপির সঙ্গে ১৫ অক্টোবর সংলাপ করবে ইসি।

এছাড়া অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে, চলতি মাসের ৫ তারিখ সকালে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিকেলে জাকের পার্টি, ৮ তারিখ সকালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও বিকেলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), ৯ তারিখ জাতীয় পার্টি, ১০ তারিখ সকালে বিকল্পধারা বাংলাদেশ; বিকেলে ইসলামী ঐক্যজোট, ১১ তারিখ সকালে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি; বিকেলে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ১২ তারিখ সকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও বিকেলে গণতন্ত্রী পার্টি,  ১৬ তারিখ সকালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও বিকেলে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), ১৯ অক্টোবর সকালে জাতীয় পার্টি-জেপি; বিকালে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি।

এরপর ২২ অক্টোবর পর্যবেক্ষক, ২৩ অক্টোবর নারী নেত্রী এবং ২৪ অক্টোবর নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মত বিনিময় করবে ইসি।