বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের উজ্জ্বল সাক্ষী হয়ে রয়ে গেছে সে সময়ের ‘ডাকটিকিট’, পোস্টার আর লিফলেটে। একাত্তরে সেগুলোই যেন হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদের ভাষা। শত্রুর বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিল দুর্বার প্রতিরোধ।
একাত্তরের সেই পোস্টার আর ডাকটিকিটে চোখ রেখে খুব সহজেই ঘুরে আসা যায় ইতিহাসের অলি-গলিতে।
আমাদের দেশে কবি,সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, বীরশ্রেষ্ঠদের স্মরণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে এ পর্যন্ত অনেকগুলো স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তাঞ্চল থেকে ডাকটিকিট প্রকাশ করে ডাক বিভাগ মুক্তিযুদ্ধে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তেমনি স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয় এ পর্যন্ত অনেক ঐতিহাসিক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। এদেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বের মাঝে তুলে ধরেছে ডাকটিকিট। মুক্তাঞ্চল থেকে বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিট প্রকাশের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই প্রবাসী সরকার মুক্তাঞ্চল থেকে বাংলাদেশের প্রথম ৮ টি ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
মি. জন স্টোনহাউস লন্ডন থেকে ফোন করে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি বিমান মল্লিকে ডাকটিকিটের নকশা করার অনুরোধ করে।
১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই লন্ডনের হাউস অব কমন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী স্বাধীন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ডাকটিকিটগুলো এবং ‘ফাস্ট ডে কভার’ প্রদর্শনা করেন।
একাত্তরের রণাঙ্গনে লিফলেটও হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদের ভাষা। মানুষকে জাগাতে ও মুক্তিযুদ্ধে উৎসাহিত করতে রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ঢাকার আগারগাঁও এর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের গ্যালারিতে ঠাই মিলেছে এমন বেশ কিছু পোস্টার ও লিফলেটের।
এর মাঝে একটি হাতে লেখা লিফলেট সহজেই চোখে পড়ে সবার। ‘ প্রতিরোধ’ শিরোনামে অনেকটা পত্রিকার অদলে গড়া এ লিফলেট যেন পাকিস্থানের অনাচারের হিসেব নিকেশ। আর মুক্তির বার্তা।
এছাড়া বেশ কিছু লিফলেটে লক্ষ করা যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের অবয়ব।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষণ করা এই চারটি ছবি ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে আছে এখনও, বামপাশ থেকে প্রথম ছবিটি এস এ জালাল এবং জাপানি নাগরিকগন বাঙালি শরণার্থীদের জন্য অর্থের জন্য ব্যানার নিয়ে সাহায্য চাচ্ছে। দ্বিতীয় ছবিটি, সদূর নিউইয়র্কে জর্জ হ্যারিসনের কনসার্ট ফর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে গড়ে তোলে বিশ্বজনমত। তৃতীয় এবং শেষ ছবিটে উঠে এসেছে সুজন এবং ফারুক সরকার কানাডা থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন এবং আমেরিকায় স্যালি উইলোবির নেতৃত্বে মিছিল করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে।
ছবি- জাকির সবুজ