রাজধানীসহ সারাদেশে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপের পরে এবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বারো আউলিয়ার ত্রিপুরাপাড়ায় অজ্ঞাত রোগে আজ আরও ৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত ৪ দিনে এ নিয়ে মোট ৯ শিশুর মৃত্যু হলো। চিকুনগুনিয়াতে কোন মৃত্যুর খবর না পাওয়া গেলেও এই অজ্ঞাত রোগের শিশুদের মৃত্যুর সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পরে জ্বর নিয়ে নানামুখী শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরাপাড়ায় ৪৫০টি পরিবার বাস করে। এই এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে শিশুদের গায়ে জ্বর, কাশি এবং পরবর্তী শরীরে র্যাশ ওঠায় মারা যাচ্ছে একের পর এক শিশু। এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে আরো ২৮ জন। তাদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অজ্ঞাত এ রোগের কারণ ও ধরণ সম্পর্কে জানতে ঢাকা থেকে সরকারের রোগতত্ত্ব ও রোগ নির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এর একটি টিম সীতাকুণ্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের থেকে অসুস্থতার লক্ষণ হিসেবে বিভিন্ন উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। হয়তো দ্রুত একটা ফলাফল পাওয়া যাবে নয়তো আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে রোগটির বিস্তারিত জানতে। শুধু জ্বরের কারণ বা তার ধরণ বোঝা না, আমরা মনে করি এই জ্বর কোথা থেকে কীভাবে এলো, তারও শেকড় খুঁজে বের করা উচিত। হঠাৎ করে চিকুনগুনিয়া জ্বর কেনো দেশব্যাপী ছড়িযে পরলো, তা এখনও জানা যায় নি। এই জ্বরে কোন প্রাণহানি হয়নি বলে একে মহামারিও ঘোষণা করা হয়নি। কখনও জনগণকে সচেতন হতে বলে, নয়তো মসজিদ-মন্দিরে দোয়ার আয়োজন করেই দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ তাদের দায় এড়াচ্ছেন। চিকুনগুনিয়া নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়া ও আদালতে রিট হবার আগে পরে কিছুটা মশক নিধন কর্মসূচি দেখা গেলেও তা খুবই অপ্রতুল অকার্যকর বলে ঘটনাচিত্রে মনে হচ্ছে। এমনিতেই চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে জনমনে আতঙ্ক আছে, এরমধ্যে চট্টগ্রামে ওই অজ্ঞাত রোগ নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনবহুল এই দেশে একটি সংক্রামক বা প্রাণঘাতি অজ্ঞাত রোগ ছড়িয়ে পড়লে, তা ভয়াবহরুপ ধারণ করতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। কোন রোগে আক্রান্ত ও সংক্রমণ শুরু হবার পরে সরব ও সক্রিয় হবার সংস্কৃতি বন্ধ হওয়া উচিত, সেক্ষেত্রে সারাবছর ক্ষতিকর মশার প্রজনন নিয়ন্ত্রণসহ জনসচেতনতা কর্মসূচি চালানো উচিত। দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো নিয়ে কার্যকরভাবে ভাববেন ও দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।